প্রতীকি ছবি
দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস কেন্দ্র পালন করবে তাদের মতো। বাংলাও নিজেদের মতো করেই ওই বিশেষ দিনটি উদ্যাপন করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পৃথক উদ্যাপনের পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন বৃহস্পতিবারেই। রাজ্যের অনুষ্ঠান জুড়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বাংলা ও বাঙালির আত্মত্যাগকে কুর্নিশ জানানো হবে।
কেন্দ্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বাংলা ও বাঙালির ভূমিকাকে খাটো করে দেখাতে চাইছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। বিশেষত ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিকল্পনা-বৈঠকে বাংলাকে ‘নীরব’ রাখায় এই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই এ দিন নিজেদের মতো করে ওই বিশেষ দিনটি পালনের পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, শুক্রবার ঋষি অরবিন্দের সার্ধশতবর্ষ পালন কমিটির বৈঠক ডেকেছেন মোদী। সেই বৈঠকে তিনি যে থাকতে পারবেন না, এ দিনের কর্মসূচি চলাকালীনই মমতা তা কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়ার ভার দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। এই প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্য, “আমার সঙ্গে অত বেশি রাজনীতি করা উচিত নয়।” তাঁর সংযোজন, “ভারত সরকার যা করবে করুক, আমরা আমাদের মতো করে করব। গত কাল (বুধবার) বলতে দিলে বলতাম। জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় স্তোত্র সব বাদ!”
অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি-বৈঠকে মমতাকে বলতে না-দেওয়া শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মমতার উপস্থিত না-থাকার অন্যতম কারণ। তবে প্রশাসনিক শিবিরের বক্তব্য, ঋষি অরবিন্দকে নিয়ে রাজ্যের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েই আছে। সেটাকেও মোদীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর যোগ দিতে না-পারার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি-বৈঠকে তাঁকে যে বলতে দেওয়া হয়নি, সেই বিষয়ে মমতা কোনও শব্দ খরচ না-করলেও নবান্ন সভাঘরে এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা সরব হয়েছেন। প্রায় প্রত্যেকেরই প্রস্তাব ছিল, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা তুলে না-ধরলে ইতিহাসই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এমন অনেক পুরুষ-মহিলা সেই আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন, যাঁদের নাম অনেকেই জানেন না। রাজ্যের বহু জায়গা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছিল। সেই সব এলাকা নিয়ে পর্যটন এবং হেরিটেজ সার্কিট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্মান জানাতে টাকার সমস্যা হবে না। কেন্দ্র বরাদ্দ দেয়নি। সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সব করব।”
স্থির হয়েছে, স্বাধীনতার ৭৫তম বছরের উদ্যাপনের পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন থেকে ৩০ জানুয়ারি, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মৃত্যুদিন পর্যন্ত সময় পর্ব পালিত হবে। তখন গুরুত্বপূর্ণ সৌধ বা ভবন আলোকিত থাকবে। ১৫ অগস্ট থেকে পরবর্তী সাত দিন উদ্যাপন কর্মসূচি চলবে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন দফতর পালন করবে নানা কর্মসূচি।