আবছায়া: কুয়াশায় ঢেকেছে রাস্তা। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র
স্লগ ওভারে ঝোড়ো ইনিংস একেই বলে! পাহাড় থেকে সমতল কেঁপে যাচ্ছে তার কাছে। এমন হাঁড়কাপানো ঠান্ডা অনুভব করে অনেকেই ভাবছেন মাঘের এই বাঘা শীত আর কত দিন? তাঁদের জন্য হাওয়া অফিসের বার্তা, কলকাতা-সহ রাজ্যে আরও দিন দু’য়েক শীতের দাপট চলবে। তারপরই বাড়তে শুরু করবে রাতের তাপমাত্রা।
রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা ৩ ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ২২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা ৫ ডিগ্রি কম। ফলে শনিবারের তুলনায় রবিবার ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে বেশি। কিন্তু স্লগ ওভারে শীতের এই ঝোড়ো ব্যাটিং ক্ষণস্থায়ী হবে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। সরস্বতী পুজোর সময় বৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখছে তারা।
ঋতুচক্রের হিসাবে শীতের বিদায় কার্যত আসন্ন। তাই সরস্বতী পুজোর বৃষ্টি দিয়েই সে বিদায় নেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। তবে প্রকৃতির মতিগতি যে ভাবে বদলাচ্ছে, তাতে সরস্বতী পুজোর পরে ফাল্গুনেও শীতবাবুর প্রত্যাবর্তন হবে কি না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আবহবিদদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মাঘের বাঘা শীত কিন্তু বিরল নয়। বরং মাঝেমধ্যেই জানুয়ারির শেষ লগ্নে এমন ভেল্কি দেখায় উত্তুরে হাওয়া।
রাজ্যে শীতের নিরিখে স্বাভাবিক ভাবেই শীর্ষে থাকবে দার্জিলিং। তবে সমতলের হিসাবে ধরলে শনিবার সব থেকে বেশি শীত ছিল জলপাইগুড়িতে (৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। তার গা ঘেঁষে রয়েছে শিলিগুড়ি এবং কোচবিহার। রবিবারের ছবিও একই কথা বলছে। গাঙ্গেয় বঙ্গে শীতে এ বার পুরুলিয়া টেক্কা দিচ্ছে সকলকে। সেখানে রাতের তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৮ ডিগ্রি প্রায় ছুঁয়েই ফেলেছে। তার পরেই রয়েছে শ্রীনিকেতন, পানাগড়। বর্ধমান, কাঁথি, দিঘা কিংবা মালদহ, বালুরঘাটেও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে।
আবহবিদেরা জানান, উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। সেখান থেকে বাধাহীন ভাবে কনকনে উত্তুরে হাওয়া বঙ্গের দিকে বয়ে ধেয়ে আসছে। তার ফলেই মাঘ মাসে এমন বাঘা শীতের দাপট। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেও শীতের দাপট ভালই মালুম হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, ডালটনগঞ্জে রাতের তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পিঠে রয়েছে। বিহারের সব থেকে কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গয়া এবং মোতিহারিতে (৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।