কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। ফাইল চিত্র।
প্রথম দিনে কল্যাণী এমস পরিদর্শন এবং আজ, বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। সেই সঙ্গে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই সফরের ফাঁকে রাজ্যে কিছু ‘হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ (এইচডব্লিউসি) বা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব। এই ধরনের প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ যে-হেতু অঢেল, তাই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের এ বারের সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, এ-পর্যন্ত কেন্দ্রীয় দল সেই সব প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে বার বার বাংলায় এসেছে, যেগুলিতে রাজ্য এখনও পর্যন্ত বরাদ্দ পায়নি। যেমন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, যেমন একশো দিনের কাজ। তবে জলজীবন মিশন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন বা সড়ক পরিকাঠামোর মতো বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অবাধ এবং স্বাস্থ্য পড়ে সেই গোত্রেই।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের কলকাতায় আসা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে রাজেশের সফরের কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। দুপুরে কল্যাণী এমসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়োগ, রোগী পরিষেবা ইত্যাদি প্রশাসনিক বিষয়ে আলোচনা করেন রাজেশ। পরিদর্শন করেন অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগও। তাঁর রাত কাটানোর কথা এমসেই। আজ, বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে রাজেশের বৈঠকের পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাঁর সম্ভাব্য পরিদর্শনের বিষয়টি সমধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে প্রশাসনিক শিবির।
২০১৭ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির আওতায় এইচডব্লিউসি গড়ার পরিকল্পনা করে কেন্দ্র। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেটে এই খাতে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে তারা। কেন্দ্রের লক্ষ্য, এই ধরনের দেড় লক্ষ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও তার কাজ চলছে। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, ২০২৩ সালের মধ্যে ১০,১৭৩টি এবং ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১৬,৬১৬টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের কাছ থেকে এই খাতে আগামী তিন বছরে রাজ্যের প্রায় ৫৬৯ কোটি টাকা পাওয়ার কথা। প্রায় দেড় হাজার ‘সাব-সেন্টারের’ নিজস্ব ভবন তৈরি, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন খাতেও অর্থ পাওয়া যাবে। প্রায় চার হাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং সাব-সেন্টারগুলিকে হেল্থ ও ওয়েলনেস কেন্দ্রে পরিণত করতে কয়েকশো কোটি টাকা পেতে পারে বাংলা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন খাতে বছরে পশ্চিমবঙ্গের ভাগে আসে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। ফলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যাতে কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছয়, সে-দিকে নজর রাখতে হয়েছে রাজ্যকে। পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, আগামী বছর লোকসভা ভোট। তার আগে এই ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রচার চালাতে চাইবে কেন্দ্র। ফলে নজর থাকবে সে-দিকেও।