প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে বেড়াতে এলে পাবেন দার্জিলিঙের পাহাড়, সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, ডুয়ার্সের জঙ্গল। আর পাবেন রসগোল্লা, যে মিষ্টি বাংলার নিজস্ব সৃষ্টি। জিআই বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন ট্যাগ পাওয়া বাংলার রসগোল্লাকে এ বার পর্যটনী আকর্ষণ হিসেবে তুলে ধরতে উদ্যোগী পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতর।
‘এক্সপিরিয়েন্স বেঙ্গল’ বিজ্ঞাপনে এই রাজ্যকে এমনিতেই ‘দ্য সুইটেস্ট পার্ট অব ইন্ডিয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘জিআই রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর বাংলার রসগোল্লাকেও আমরা সামনে রাখব বলে ঠিক করেছি। এর রূপরেখা তৈরি করতে কয়েক দিনের মধ্যেই বৈঠক হবে।’’ দফতর সূত্রের খবর, মন্ত্রী এখন উত্তরবঙ্গে। তিনি কলকাতায় ফিরলেই রসগোল্লা নিয়ে বৈঠক হবে। ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের কেক-পেস্ট্রি, ফরাসি ওয়াইন, জার্মানির চি়জ, ডেনমার্কের বিয়ার কিংবা লখনউয়ের গলৌটি কাবাব— একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি নয়। সে ভাবেই বাংলার রসগোল্লাকে তুলে ধরা হবে। বলিউডের তারকা থেকে শিল্পপতি, ভিন রাজ্যের বহু মানুষ কলকাতার ‘রসগুল্লা’ খেতে চান। এই আকর্ষণকেই পর্যটনের কাজে লাগাতে চায় দফতর।
পর্যটন বিষয়ক বিভিন্ন সভা-সম্মেলনে ইদানীং রাজ্যের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের ছবি ও পুস্তিকার সঙ্গে আর একটি পুস্তিকাও পর্যটন দফতর বিলি করছে, যার শিরোনাম ‘কলকাতা! আ ফুডিজ প্যারাডাইস!’ মানে, কলকাতা ভোজনরসিকের স্বর্গ! সেখানে মাটির হাঁড়ি ভর্তি ধবধবে সাদা রসগোল্লার ছবি। তবে এ বার কাঞ্চনজঙ্ঘা, ম্যানগ্রোভ জঙ্গল, দার্জিলিঙের টয়ট্রেনের সঙ্গে এক সারিতে বাংলার রসগোল্লাকে ‘শো-কেস’ করতে চায় পর্যটন দফতর। প্রায় দু’দশক আগে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ডুয়ার্সকে তুলে ধরতে বোরোলি মাছের স্বাদ-মাহাত্ম্য প্রচার করা হয়েছিল। দার্জিলিঙের চা-ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় উপাদান। তার সঙ্গেই জুড়বে রসগোল্লা।
ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটর্স কাউন্সিলের সভাপতি শুদ্ধব্রত দেব বলছেন, রসগোল্লার ক্ষেত্রে মস্ত বড় সুবিধে হল, এটা জয়নগরের মোয়ার মতো মরসুমি মিষ্টি নয়। তবে তাঁর বক্তব্য, ভিন রাজ্যের পর্যটকেরা ও বিদেশিরা কলকাতায় এসে বেশি পছন্দ করেন মিষ্টি দই আর কম মিষ্টির সন্দেশ।
তাঁর কথায়, ‘‘রসগোল্লার সঙ্গে মিষ্টি দই ও কম মিষ্টির সন্দেশকেও প্রচার করলে ভাল ফল মিলবে।’’ অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম-এর আহ্বায়ক রাজ বসুরও মত, ‘‘শুধু রসগোল্লাকে ব্র্যান্ড করে কতটা সুফল মিলবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সামগ্রিক ভাবে বাংলার মিষ্টিকে শো-কেস করলে ভাল হবে।’’