বেসরকারি ভাড়াটেদেরই ফ্ল্যাট বেচবে রাজ্য

আবাসনমন্ত্রী শোভনবাবু বলেন, ‘‘তৈরির সময়কার হিসেবের ভিত্তিতে ওই সব ফ্ল্যাটের দাম ঠিক হবে।’’ তবে যে-সব সরকারি কর্মী আবাসনে রয়েছেন (আরএইচই শ্রেণিভুক্ত), তাঁরা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ পাবেন না বলে জানান মন্ত্রী। কেউ যদি জোর করে কারও ফ্ল্যাট দখল করে রাখে, তা হলে কী হবে, সেই বিষয়ে কিন্তু ধন্দ-সংশয় রয়েই গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ০৫:০৯
Share:

বেসরকারি ভাড়াটেদেরই ফ্ল্যাট বেচার সিদ্ধান্ত রাজ্যের।

আবাসন পর্ষদের ফ্ল্যাটে থাকার লাইসেন্স এক জনের নামে। থাকেন অন্য কেউ। সেই ‘অন্য কেউ’-কেই ফ্ল্যাটটি কেনার সুযোগ দেবে রাজ্য সরকার। আবাসনমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বুধবার এই প্রস্তাবের কথা জানান। অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে প্রস্তাবটি পেশ করা হবে বলেও জানান তিনি।

Advertisement

আবাসন দফতর ঠিক করেছে, যাঁরা সরকারি কর্মী নন, কিন্তু আবাসন দফতরের লাইসেন্স পেয়ে ফ্ল্যাটে বাস করছেন, তাঁদের ওই ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ দেওয়া হবে। মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, অনেক ফ্ল্যাট ‘সাবলেট’ করা হয়েছে। অর্থাৎ লাইসেন্স এক জনের নামে, কিন্তু থাকেন অন্য কেউ। সে-ক্ষেত্রে কী হবে? শোভনবাবুর জবাব, ‘‘যিনি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন, তিনিই তা কেনার সুযোগ পাবেন। লাইসেন্স আছে কি নেই, সেটা দেখা হবে না।’’

কত দাম দিতে হবে?

Advertisement

আবাসনমন্ত্রী শোভনবাবু বলেন, ‘‘তৈরির সময়কার হিসেবের ভিত্তিতে ওই সব ফ্ল্যাটের দাম ঠিক হবে।’’ তবে যে-সব সরকারি কর্মী আবাসনে রয়েছেন (আরএইচই শ্রেণিভুক্ত), তাঁরা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ পাবেন না বলে জানান মন্ত্রী। কেউ যদি জোর করে কারও ফ্ল্যাট দখল করে রাখে, তা হলে কী হবে, সেই বিষয়ে কিন্তু ধন্দ-সংশয় রয়েই গিয়েছে।

ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত কেন?

শোভনবাবু বলেন, ‘‘প্রথমত আবাসনের ফ্ল্যাটগুলোর ভাড়া খুব কম। দ্বিতীয়ত, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি বছর যে-টাকা লাগে, সেটা ভাড়া বাবদ পাওয়া টাকার ১০-১২ গুণ।’’ বছরের পর বছর এ ভাবে টাকা খরচ করে যাওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই ফ্ল্যাট বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আবাসন দফতরের এক অফিসার জানান, তাঁদের দফতরের ফ্ল্যাট দু’টি শ্রেণিকে ভাড়া দেওয়া হয়। একটি শ্রেণিতে পড়েন সরকারি কর্মীরা। সেই শ্রেণির নাম ‘আরএইচই’। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বেতন থেকে ফ্ল্যাটের ভাড়া কেটে নেওয়া হয়। অন্য শ্রেণির নাম ‘পিআরএইচই’। এই শ্রেণিতে পড়েন সেই সব বাসিন্দা, যাঁরা সরকারি কর্মী নন। অনেক ক্ষেত্রেই এঁদের ভাড়া বাকি থেকে যায়। উল্টে ফ্ল্যাট সারাতে খরচ করতে হয় সরকারকে। সেই খরচ বন্ধ করতেই তাঁদের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। ঠিক হয়েছে, পিআরএইচই শ্রেণিভুক্তেরা ফ্ল্যাট কিনতে রাজি হলে ছ’মাসের মধ্যে টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে না-কিনলে আবাসন দফতর ওই বাসিন্দাদের তুলে দেবে।

নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনেও এই ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কেআইটি-র অধীনে থাকা ফ্ল্যাটও এ ভাবে বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। নগরোন্নয়ন দফতরের ফ্ল্যাটে সরকারি কর্মীর সংখ্যা বেশি। তাঁদের থাকার জন্যই সেগুলো রাখা হয়েছে।’’ তাই আবাসন দফতরের মতো সেগুলো বেচে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানান নগরোন্নয়ন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা। ওই অফিসার জানান, নগরোন্নয়ন দফতরের ফ্ল্যাটের চেয়ে আবাসন দফতরের ফ্ল্যাটের ভাড়া অনেক কম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement