আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, অন্ধ্র উপকূলের কাছে শুকনো বাতাস ঘূর্ণিঝড়ের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। তাতে দুর্বল হয়েছে অশনি। স্থলভূমিতে ঢুকে যাওয়ার পরে সাগর থেকে ক্রমাগত জলীয় বাষ্পের জোগান পায়নি সে। বরং একই জায়গায় থিতু হয়ে ক্রমাগত বৃষ্টি ঝরিয়ে শান্ত হয়ে গিয়েছে।
ফাইল চিত্র।
সব শক্তি নিঃশেষ করে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকাতেই যাত্রায় ক্ষান্তি দিল ‘অশনি’। বুধবার রাতেই ঘূর্ণিঝড় থেকে সুগভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল সে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার
সকালে অন্ধ্র উপকূলের স্থলভাগের উপরে আরও শক্তি প্রশমনের পরে সে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে তার প্রভাবও কমেছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, অশনির প্রভাব কেটে যাওয়ায় আজ, শুক্রবার থেকেই গাঙ্গেয় বঙ্গের তাপমাত্রা ফের বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিরও সম্ভাবনা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, অশনির প্রভাবে সাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে। তাপমাত্রা বাড়লে বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং তরাইয়ের জেলাগুলিতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে পারে বলে জানান আবহবিদেরা।
ভয়ঙ্কর ঝড়ের মূর্তিতে আবির্ভূত না-হয়ে তাপিত বঙ্গে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি দিয়েছে অশনি। তাপমাত্রাও লাগামছাড়া হয়নি। কিন্তু অশনির যাত্রাশেষে গরম আবার কেমন দাপট দেখাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ দিনই মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী দিন পাঁচেক উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপপ্রবাহ বইতে পারে। সেই গরম হাওয়া গাঙ্গেয় বঙ্গ পর্যন্ত পৌঁছবে কি না, তা নিয়েও
চলছে জল্পনা। তবে অনেক আবহবিদের বক্তব্য, বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ দখিনা বাতাস ঢুকতে থাকায় এই পর্যায়ে গরম হাওয়া গাঙ্গেয় বঙ্গে তেমন দাপুটে প্রভাব
না-ও ফেলতে পারে। তবে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অস্বস্তির আশঙ্কা থাকছেই।
গত তিন বছর মে মাসে তিনটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হাজির হয়েছিল। তবে এ বারের ঘূর্ণিঝড় অশনি সেই রুদ্রমূর্তি দেখায়নি। বরং অন্ধ্র উপকূলেই সংযত অবসান ঘটেছে তার। আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, অন্ধ্র উপকূলের কাছে শুকনো বাতাস ঘূর্ণিঝড়ের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। তাতে দুর্বল হয়েছে অশনি। স্থলভূমিতে ঢুকে যাওয়ার পরে সাগর থেকে ক্রমাগত জলীয় বাষ্পের জোগান পায়নি সে। বরং একই জায়গায় থিতু হয়ে ক্রমাগত বৃষ্টি ঝরিয়ে শান্ত হয়ে গিয়েছে।