জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগে রুজু হওয়া বহু মামলা তো আছেই। সেই সঙ্গে চিটফান্ড নিয়ন্ত্রণ আইনেও মামলা রুজু করে কেডি সিংহের অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য। দোষ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাবাস। তা ছাড়া আইন অনুযায়ী, দোষী অর্থলগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও নিলাম করে লগ্নিকারীদের পাওনা মেটাতে পারে রাজ্য।
গত ১৭ জানুয়ারি গরফা থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন ডিরেক্টরেট ওই তদন্ত করছে। ডিরেক্টরেটের ওএসডি দিলীপ আদক শুক্রবার জানান, যত টাকা লগ্নিকারীদের ফেরত দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানত জমা নেওয়া হয়েছিল, নির্দিষ্ট সময় পেরোনোর পরেও সেই টাকা না ফেরানোর অভিযোগ উঠেছে ‘অ্যালকেমিস্ট টাউনশিপ’-এর বিরুদ্ধে। এ ক্ষেত্রে সব ক’টি সহযোগী সংস্থা ও সেগুলির কর্তারা অভিযুক্ত বলে তিনি জানান।
নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের দাবি, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন চালানোর জন্য টাকা জুগিয়েছিল কেডি-র সংস্থা। বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবুল করেন, কেডি-কে তৃণমূলের সাংসদ করাই ভুল হয়েছিল। তার আগেই অবশ্য কেডি-র অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা রুজু করা হয় বউবাজার থানায়।
তবে রাজ্যের ডিরেক্টরেটের তদন্তের বিষয়টি এই প্রথম সামনে এল। এখনও অবশ্য এই মামলায় অ্যালকেমিস্ট কর্তাদের কাউকে ডেকে পাঠানো হয়নি। দিলীপ আদক বলেন, ‘‘তদন্তে যা বেরোবে, পরবর্তী পদক্ষেপ সেই মতো করা হবে।’’
রোজভ্যালি গ্রুপের বিরুদ্ধেও রুজু হওয়া মামলার তদন্ত করছে রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন ডাইরেক্টরেট। ওই অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে হুগলির মগরা থানায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলা রুজু করা হয়। রোজভ্যালির বিরুদ্ধে দু’টি কেন্দ্রীয় সংস্থা— সিবিআই এবং ইডি-ও তদন্ত করছে।
দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৪-র ৯ মে-র আগে রুজু হওয়া মামলার তদন্ত সিবিআই করবে। পরবর্তী মামলাগুলির তদন্ত আমরা আলাদা ভাবে করতে পারি।’’
এ দিনই ইকুইনক্স নামে অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তা, প্রশান্ত চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে ডিরেক্টরেট। এই প্রথম নতুন আইনে ডিরেক্টরেট কাউকে সরাসরি গ্রেফতার করল। অভিযোগ, সংস্থাটি ২০০৯ থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা তুলেছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো টাকা ফেরত দেয়নি।