বুধবার বিকেলে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল। ফাইল চিত্র ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের দু’দফার জিজ্ঞাসাবাদের পর এ বার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকদের হানা হুগলির যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বাসস্থানে। শুক্রবার সকাল থেকে ইডি আধিকারিকরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে কুন্তলের দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর। নিউ টাউনের চিনার পার্ক এলাকা একটি আবাসনে জোড়া ফ্ল্যাট ওই যুবনেতার বাসস্থান বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। সেই ফ্ল্যাটগুলিতেই চলছে তল্লাশি।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কুন্তলের বিরুদ্ধে। তাপসের দাবি, তিনি সিবিআইকে জানিয়েছেন যে, বেআইনি শিক্ষক নিয়োগের ১৯ কোটি টাকা কুন্তলের কাছে পৌঁছেছে। যদিও সিবিআই ওই বিষয়ে কিছু জানায়নি। আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই দাবির সত্যতা এখনও মেলেনি। বস্তুত, তাপসের সেই দাবির সত্যাসত্য অনুসন্ধানেই সিবিআই কুন্তলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাপসের দাবি ছিল, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কুন্তল। এ ছাড়াও তাপসের পরিচিতেরা তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন কুন্তল। সেই সংক্রান্ত নথিও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তাপস। তিনি এ-ও দাবি করেছিলেন যে, মোট ২৬০০ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন কুন্তল।
সে বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুন্তলকে সিবিআই দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার বিকেলে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন তৃণমূলের যুবনেতা। সিবিআই দফতরে বেশ কিছু নথি সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন কুন্তল। এক ঘণ্টা থাকার পর বেরিয়ে যান। বুধবারই দুপুরে নিজাম প্যালেসে এসেছিলেন তাপসের এক প্রতিনিধিও। বুধবার নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছিলেন কুন্তল। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ‘‘আমি যদি টাকা নিতাম, সিবিআই কি এত সহজে আমাকে ছেড়ে দিত?’’ এর পর বৃহস্পতিবারেও কুন্তলকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। শুক্রবার সকাল থেকে কুন্তলের নিউ টাউনের বাসস্থানে তল্লাশি শুরু করেছে ইডি।
(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, নিউ টাউনের যে দু’টি ফ্ল্যাটে শুক্রবার সকাল থেকে তল্লাশি চলছে, সেগুলি কুন্তলের নামে। দ্বিতীয়ত, সিবিআইয়ের দাবি, তাপস মণ্ডল তাঁদের জানিয়েছেন যে, বেআইনি শিক্ষক নিয়োগের ১৯ কোটি টাকা কুন্তলের কাছে পৌঁছেছে। এই দু’টি তথ্যই ভুল। প্রথমত, নিউটাউনের দু’টি ফ্ল্যাট কুন্তলের বাসস্থান হলেও সেগুলি তাঁর নামে নয়। দ্বিতীয়ত, সিবিআই নয়, তাপসই বরাবর দাবি করেছেন, বেআইনি শিক্ষক নিয়োগের ১৯ কোটি টাকা কুন্তলের কাছে পৌঁছেছে। সিবিআই ওই বিষয়ে কোনও দাবি করেনি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। দু’টি ভ্রমই সংশোধন করে দেওয়া হল)