ধৃত: পুলিশ হেফাজতে বাসব রামবাবু। —নিজস্ব চিত্র
শ্রীনু নায়ডু খুনে ‘বড় মাথা’র যোগের কথা বলেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। মঙ্গলবার দুপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের তানুকা থেকে খড়্গপুরের রেল-মাফিয়া বাসব রামবাবুকে গ্রেফতারের পর পুলিশ সুপার দাবি করলেন, রামবাবুই সেই বড় মাথা। খুন করে রামবাবু খড়্গপুরে মাফিয়া-রাজ শুরু করতে চেয়েছিল।
তবে, বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ওই দাবি করার সময়ে খুনের সঙ্গে খড়্গপুরের বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের যোগাযোগ ছিল না বলেও জানান পুলিশ সুপার। এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমাকে শ্রীনু হত্যায় ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছিল। মুখে না বললেও জেলা পুলিশ সুপারের ইঙ্গিত সে দিকে ছিল। আমি সকলকে চ্যালেঞ্জ করায় ভয়ে এখন উল্টো সুরে কথা বলছেন পুলিশ সুপার।’’
১১ জানুয়ারি খুন হয় শ্রীনু। রামবাবুকে গ্রেফতারের পর শ্রীনু খুনে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩। বুধবারই তাকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে বিচারক তাকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দিন রামবাবু খড়্গপুরেই ছিল। শ্রীনু খুন হওয়ার পরে গাড়ি ভাড়া করে কিছু শাগরেদ নিয়ে সে শহর ছাড়ে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সে পালিয়ে বেড়ায়। ক’দিন আগে বিশাখাপত্তনম থেকে ২৪৮ কিলোমিটার দূরে তানুকায় রামবাবু বাড়ি ভাড়া নেয়। তানুকায় বাসবী মন্দির আছে। বাসবী শিবেরই একটি রূপ। রামবাবু বাসবীভক্ত।
বাসবীভক্ত বলেই কি রামবাবু তানুকায় আশ্রয় নিয়েছিল? ভারতীদেবী বলেন, “হতে পারে। তানুকায় আশ্রয় নেওয়ার একটা কারণ তো থাকবেই।” রামবাবুর সঙ্গে থাকা শাগরেদদের নাম অবশ্য এখনই বলতে চায়নি পুলিশ সুপার। শ্রীনুকে খুনে রামবাবুর কোন স্বার্থ রয়েছে?
পুলিশ সুপারের দাবি, ২০১৩ থেকে পুলিশ ‘জিটি’ (গুন্ডা ট্যাক্স) বন্ধ করে। মাফিয়ারা ‘জিটি’ আদায় করতে পারছিল না। শ্রীনুর সঙ্গে রামবাবুর শত্রুতা দীর্ঘদিনের। রামবাবুর মনে হয়েছিল, শ্রীনু থাকলে তার পক্ষে একা মাফিয়ারাজ চালানো অসম্ভব। শ্রীনুকে শেষ করলে মাফিয়ারাজ শুরু করা যাবে। সেই জন্যই এই খুন।