কেন্দ্রের ২০১৭-১৮ সালে সমীক্ষায় বাংলা ছিল অষ্টম স্তরে। প্রতীকী ছবি।
‘ফার্স্ট লেভেল’ বা প্রথম স্তরে ঠাঁই হয়নি কোনও রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গ জায়গা পায়নি এমনকি দ্বিতীয় স্তরেও। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ২০২০-২১ বছরের ‘পারফর্ম্যান্স গ্রেডিং ইনডেক্স’-এ স্কুলশিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ‘থার্ড লেভেল’ বা তৃতীয় স্তরে। পশ্চিমবঙ্গের আগে রয়েছে কেরল, পঞ্জাব-সহ সাতটি রাজ্য। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় বাংলার এই ফল ভাল বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষক থেকে নানান পরিকাঠামো, সব কিছুর অভাব সত্ত্বেও এই ‘অগ্রগতি’ কী ভাবে সম্ভব হল, তা নিয়ে শিক্ষা শিবিরের একটি অংশ রীতিমতো সংশয়ে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে যে-রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম স্তরে কোনও রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম নেই। দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে কেরল, পঞ্জাব, চণ্ডীগড়, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, রাজস্থান ও অন্ধ্রপ্রদেশ। তৃতীয় স্তরে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কর্নাটক, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, হরিয়ানা, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, লক্ষদ্বীপ, ওড়িশা, দাদরা নগর হাভেলি এবং দমন দিউ।
কেন্দ্র এই সমীক্ষা শুরু করেছিল ২০১৭-১৮ সালে। সে-বার বাংলা ছিল অষ্টম স্তরে। তখন বাংলার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬০১-৬৫০-এর মধ্যে। ২০১৮-১৯ সালে ষষ্ঠ (৭০১-৭৫০), ২০১৯-২০ সালে চতুর্থ (৮০১-৮৫০) স্তরে উঠে আসার পরে এ বার বাংলার ঠাঁই হয়েছে তৃতীয় স্তরে (৮৫১-৯০০)। এটাকে ক্রমিক উত্তরণ হিসেবেই দেখছে শিক্ষা শিবিরের বড় অংশ।
এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন বলেন, “দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারেই আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমশ এগোচ্ছি।’’
তবে শিক্ষা শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, সব তথ্যই কি যথাযথ? কেন্দ্রের স্কুলশিক্ষা দফতরের ইউনিফায়েড ডিসট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম অব এডুকেশন (ইউ ডাইস)-এ বিভিন্ন স্কুল যে-সব তথ্য দেয়, তার ভিত্তিতেই এই মান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু স্কুলের সরবরাহ করা সেই সব তথ্য আর যাচাই করা হয় না।
রাজ্য সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘ভাষা বা গণিতে ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতার যে-চিত্র আমরা শ্রেণিকক্ষে দেখতে অভ্যস্ত, স্কুলের পাঠানো তথ্য অনেক সময়েই তার থেকে বেশ কিছুটা আলাদা হয়।’’
অভিযোগ, রাজ্যে গবেষণাগার ও গ্রন্থাগারের অভাব রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়নি দীর্ঘ কাল। শিক্ষক-সঙ্কট তীব্র। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ কী ভাবে উপরের স্তরে উঠে আসছে, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই।