নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগের নিয়মে বদল আনতে চায় এসএসসি।
দুর্নীতির অভিযোগের আবহে এ বার নিয়োগের নিয়ম বদলাতে সক্রিয় হলেন পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) কর্তৃপক্ষ। বুধবার এ কথা জানিয়ে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘এসএসসির তরফে অ্যাকাডেমিক নম্বর (অ্যাকাডেমিক স্কোর) তুলে দেওয়ার জন্য রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।’’
‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ তুলে দেওয়ার সুপারিশের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিদ্ধার্থ জানান, যিনি ১০ বছর আগে পাশ করেছেন তাঁর সঙ্গে বর্তমানে যিনি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁর প্রাপ্ত নম্বরের তফাত অনেকটাই হয়ে যায়। তা ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নম্বর দেওয়ার ‘প্রবণতায়’ তারতম্য রয়েছে। ফলে প্রতিযোগিতায় সমতা বজায় রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত।
এসএসসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আপাতত নবম এবং দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই পদ্ধতিতে নিয়োগ করার মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সামঞ্জস্য থাকবে। যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা ওএমআর শিটে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষপাতী।’’ তা ছাড়া, ২০১৯-২০ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় কাউন্সেলিং (ইন্টারভিউ) উঠে গেলেও তা ফেরত আনার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলার তদন্তে ওএমআর শিটে নানা অনিয়ম প্রকাশ্যে এসেছে। তা সত্ত্বেও কেন এসএসসি কর্তৃপক্ষ ওএমআর শিট চান? সিদ্ধার্থের ব্যাখ্যা— ওএমআর শিটে পরীক্ষা নিলে মামলা এবং আরটিআই (তথ্যের অধিকার আইন)-এ আবেদন কম হয়। কারণ, পরীক্ষার্থীরা ওএমআর শিটের প্রতিলিপি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁর পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলের মূল্যায়ন করতে পারেন।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগ বিধিতে বদল আনা হবে। এসএসসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন আপাতত শুধু নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম বদলের জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে সুপারিশ করেছেন তাঁরা। এর পর সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি ঘুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় যাবে এই সুপারিশ। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছাড়পত্র পেলে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নয়া বিধি।