সূচি মানলে এখন নির্বাচন হওয়ার কথা মে মাসে। ফাইল চিত্র।
প্রথমে প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান ছিল ফেব্রুয়ারি নাগাদ হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু সেই অনুমান মেলেনি। সূচি মানলে এখন সেই নির্বাচন হওয়ার কথা মে মাসে।
তবে আগামী মাসের প্রথমে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ, চালু দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে সব ঠিক থাকলে তার মধ্যে ভোট ঘোষণা হওয়ার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে মে মাসে কবে পঞ্চায়েত ভোট হবে, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট তিন দফায় হয়েছিল ১-৫ মে’র মধ্যে। ১৫ মে’র মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হয়।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুয়ারে সরকারের চলতি কর্মসূচি মানুষের মন বোঝা এবং সরকারি কর্মসূচি প্রচারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা হাতিয়ার। ফলে ভোটের আগে এর অগ্রাধিকারও সর্বাধিক। প্রসঙ্গত, চলতি তথা ষষ্ঠ দফার এই দুয়ারে সরকার চলার কথা ছিল ১-২০ এপ্রিল পর্যন্ত। এখন তা-ই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে। বস্তুত, একটা সময় গরম এড়িয়ে ভোট করার পক্ষে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। পর্যবেক্ষক শিবিরের মতে সম্ভবত সেই কারণে গত ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া পঞ্চম দফার দুয়ারে সরকার দীর্ঘায়িত হয়েছিল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সে সময়ে পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে একাধিক জেলায় নিজে গিয়েছিলেন মমতা। তাই অনুমান ছিল, হয়ত সে সবের পরে ফেব্রুয়ারিতেই হবে ভোট।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চায়েত ভোটের দিন চূড়ান্ত হয়। তার ভিত্তিতে তা ঘোষণা করে কমিশন। দুয়ারে সরকারের পরিষেবা প্রদান চলাকালীন সেই পদক্ষেপ করা যাবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, আগে ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মে মাসের শেষের দিকে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই আন্দাজেই প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের ২১-৩৫ দিনের (ছুটির দিন বাদে) মধ্যে ভোট করানো সম্ভব। এই পরিস্থিতিতে মে মাসের গোড়ায় ভোট ঘোষণা হলে অবশ্য সেই মাসের শেষলগ্নে ভোট হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই শুনেছি।”
তবে চলতি আবহাওয়াও ভাবাচ্ছে প্রশাসনিক কর্তাদের। যে ভাবে জেলায় জেলায় কার্যত তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাতে অত গরমে ভোটকর্মীদের ভোটে কাজ করা বেশ সমস্যার। সমস্যা ভোটারদেরও। আবার জুন মাসের মাঝামাঝিতে রাজ্যে বর্ষা ঢুকে যায়। ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনায় তখন ভোট করানোও ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় কবে ঘোষণা এবং ভোট হবে, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে।