মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী তিনি নিজে ঠিক করবেন বলে ইতিমধ্যেই বার্তা দিয়েছেন খোদ তৃণমূল-নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, সেই প্রার্থী বাছাইয়ে ‘এক ব্যক্তি-এক পদ’ নীতিকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সূত্রেই জনপ্রতিনিধি অথবা গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ার কথা প্রাথমিক ভাবে দলে আলোচিত হয়েছে। ব্যতিক্রমী কিছু জায়গা বাদ দিয়ে এই ‘ফর্মুলা’ নিয়ে পুরোদস্তুর নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে শাসক দলের শীর্ষস্তরে।
কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন পুরভোটে নতুন মুখ আনার লক্ষ্যে আগেই এই ফর্মুলা চেয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও অনেক ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করা যায়নি। দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটে ফের এক বার সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হতে চলেছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় পদাধিকারীদের তালিকার বাইরে রাখার কথা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছে। সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসনকে আলাদা রাখতেই মূলত এই ভাবনা। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘স্থানীয় প্রশাসনের কাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই সমান্তরাল
ভাবে সাংগঠনিক সক্রিয়তাও অত্যন্ত জরুরি। তাই কোনও ক্ষেত্রে কাজের চাপ যাতে না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে এই ব্যবস্থা কাজে দেবে।’’ তা ছাড়া, গত ১০ বছরে পঞ্চায়েতের কাজে নানা জায়গায় যে অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার ‘দাগ’ লেগেছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতেও এই প্রক্রিয়া জরুরি বলে মনে করছেন শাসক নেতারা।
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত-ব্যবস্থার সব থেকে উপরের স্তর জেলা পরিষদে কিছু জনপ্রতিনিধি আছেন। বিশেষত কয়েকটি জায়গায় বিধায়কও রয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে। এবং উল্লেখ্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাজ এক অর্থে কোনও দফতরের পূর্ণমন্ত্রীর থেকে কম নয়। সে ক্ষেত্রে বিধায়কের ঘাড় থেকে দায়িত্ব কমাতে তাঁদের প্রার্থী না করার বিষয়টি ‘বিবেচনা’য় রাখা হচ্ছে। একই রকম ভাবে বিধায়কদের আর জেলা পরিষদের সদস্য না রাখার বিষয়টিও ভাবনায় রয়েছে। তবে সংরক্ষণ বা অন্য বাধ্যবাধকতা থাকলে, সে ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রকে ব্যতিক্রম হিসেবে চিহ্নিত করে ছাড় দিতে হতে পারে বলে ধারণা দলীয় নেতৃত্বের।
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই নতুন মুখ তুলে আনার ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্বে বিশেষ দ্বিমত নেই। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের এই কাজের সঙ্গে পরিচিত করে তুলতে এখনই এই পদক্ষেপ করতে চাইছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতের কাজে অভিজ্ঞতা আছে, এমন কয়েক জনকে তাঁদের সঙ্গে রেখে এই প্রক্রিয়াকে একটি ভিন্ন চেহারা দিতে চাইছে তারা।