বাঁকুড়া আদালত চত্বরে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
সারদা কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেনের দেওয়া রিপোর্ট গ্রহণ করছে না রাজ্য সরকার। আর তা কমিশনের একাধিক কর্তাকে (এখন প্রাক্তন) জানিয়েও দিয়েছে রাজ্যের অর্থ দফতর। আপাতত বেওয়ারিশ লাশের মতোই কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটের অফিসে পড়ে রইল শ্যামল সেনের দেওয়া সারদা কমিশনের রিপোর্ট।
গত বুধবার ২২ অক্টোবর কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়। সে দিনই রিপোর্ট তৈরি করেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামল সেন। রাত ১০টার পরে তা পাঠানো হয় নবান্নে। কিন্তু তা গ্রহণ করেননি কন্ট্রোল রুমের কর্মরত পুলিশ। পরে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কালীপুজোর ছুটির পর, সোমবার অফিস খুললেই তা পৌঁছে দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে।
এ দিন অফিস খোলার পরেও অবশ্য ওই রিপোর্ট নিয়ে কেউই আর নবান্নে যাওয়ার আগ্রহ দেখাননি। নবান্নের এক অফিসারের কথায়, “কমিশনের মেয়াদ শেষ। এখন ওই অফিসে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই সরকারি কর্মী। ওই রিপোর্ট যে রাজ্য সরকার গ্রহণ করবে না, তা জানিয়ে দিয়েছেন অর্থ দফতরের প্রধান সচিব।” তাই ওই রিপোর্ট যেখানে ছিল, সেখানেই পড়ে রয়েছে। কেউ আগ বাড়িয়ে তা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবেননি।
আলিপুর আদালতে দেবযানী মুখোপাধ্যায়। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কমিশন তিন সদস্যের। অথচ চেয়ারম্যান একাই ওই রিপোর্ট তৈরি করেছেন। তাই ওটা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। শ্যামল সেনের রিপোর্ট জমা পড়ার পর একই অভিযোগ করেছিলেন কমিশনের সদস্য অম্লান বসু। তিনি বলেছিলেন, “ওটা শ্যামল সেনের ব্যক্তিগত রিপোর্ট। কমিশনের নয়। সরকারের ওই রিপোর্ট গ্রহণ করা উচিত নয়।”
সরকার যে তাঁর লেখা রিপোর্ট গ্রহণ করছে না, তা আগেই জেনেছেন শ্যামলবাবু। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এ দিন তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার যদি গ্রহণ না করে, তো আমি কী করতে পারি! আমি তো আর জোর করে গ্রহণ করাতে পারি না।”
এ দিকে সারদা কমিশনের মেয়াদ না বাড়ানো নিয়ে এ দিন সরব হয়েছে চিটফান্ড সাফারার্স ইউনিটি ফোরাম। ফোরামের পক্ষে সুজন চক্রবর্তী, সুনন্দ সান্যাল, সমীর পুততুণ্ড এবং অসীম চট্টোপ্যাধ্যায়ের দাবি, এ বার আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা নিক রাজ্য সরকার। তা না হলে ফের রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।