গলদ কি গোড়াতেই

আশঙ্কা ছিলই। শেষপর্যন্ত সত্যি হল সে আশঙ্কা। বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলা হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে। এরপরই শুরু হয়েছে ময়নাতদন্ত। আশঙ্কার কথা জেনেও কেন শেষপর্যন্ত বাঁচানো গেল না ডোরাকাটাকে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাঘের দেহ। নিজস্ব চিত্র

আশঙ্কা ছিলই। শেষপর্যন্ত সত্যি হল সে আশঙ্কা। বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলা হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে। এরপরই শুরু হয়েছে ময়নাতদন্ত। আশঙ্কার কথা জেনেও কেন শেষপর্যন্ত বাঁচানো গেল না ডোরাকাটাকে।

Advertisement

বনকর্তাদের একাংশ মানছেন, প্রস্তুতিতে ঘাটতি তো ছিলই। এর পাশাপাশি মানুষের জঙ্গলে ঢোকা আটকাতে যতটা কঠোর হওয়া প্রয়োজন ছিল সবক্ষেত্রে তা করা হয়নি। যদিও বনকর্তাদের অন্য অংশের বক্তব্য, খাতায় কলমে যা করা উচিত এ ক্ষেত্রে বাস্তবে তা করা যায়নি। কারণ, কড়া পদক্ষেপ করতে গেলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বাঘ যাতে আতঙ্কিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়েছে। নজর দিয়ে হয়েছে আদিবাসী প্রথা, বিশ্বাসের উপরেও।

তাহলে কি ভারসাম্য রাখার চেষ্টাতেই সব জেনেও বিপদের মুখে ফেলে রাখা হয়েছিল ডোরাকাটাকে? ঝাড়গ্রামের পরিবেশ কর্মী মৃণ্ময় সিংহ বলছেন, “গত দেড় মাসে সংবাদমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে বাঘ ধরার প্রচার হয়েছে মাত্র। তার ফলে সাধারণ মানুষের মনে ভয়-ভীতি বেড়েছে। কিন্তু বাঘ সম্পর্কে ভয় ভীতি দূর করার জন্য উপযুক্ত সচেতনতা প্রচারটাই তো হয়নি।” এক প্রাক্তন বনকর্তা জানান, ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার সীমানায় দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলে চিতাবাঘও রয়েছে। উপযুক্ত খাদ্যশৃঙ্খল থাকায় লোকালয়ে তাদের দেখা যায় না। তবে জঙ্গলমহলের সমতলে গত আশি-একশো বছরে বাঘ দেখেননি এলাকাবাসী। তা-ও আবার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার! কিছুদিন আগে বাঘঘরার জঙ্গলে বাঘের হামলায় কয়েকজন জখম হওয়ায় পরেই বনকর্মীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, শিকারে যাওয়া লোকজন বাঘটির ক্ষতি করতে পারেন। কিন্তু সম্প্রদায়গত বিষয়ে অযথা হস্তক্ষেপ করার ঝুঁকি নেয়নি বন দফতর। পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘটনের জটে শিকারিদের নিরস্ত করার ব্যাপারে প্রশাসন কড়া মনোভাবও নিতে ব্যর্থ হয়। যদিও প্রাক্তন বনকর্তা প্রণবেশ সান্যাল মনে করাচ্ছেন, পুলিশ ও বনরক্ষীদের দিয়ে শিকার উত্সব বন্ধ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।

Advertisement

তা হলে উপায়? প্রাক্তন বনকর্তারা মনে করেছেন। উপায় একটাই। আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁদের মধ্যে বন্যপ্রাণ রক্ষার প্রচার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement