থানায় ব্যবস্থা হয়েছে র্যাম্প ও হুইলচেয়ারের। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে একা ছিলেন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসা করানোর কেউ ছিল না। খোঁজ নিতে গিয়ে তা জানতে পারেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। জামালপুরে দামোদরের ধারে একটি বাড়িতে একা থাকা সেই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে জেলা পুলিশ।
শুধু ওই বৃদ্ধা নন, জেলায় একা থাকেন এমন প্রতিবন্ধীদের নাম-ঠিকানা জোগাড় করে ‘তথ্য-ব্যাঙ্ক’ তৈরি করছে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ। নিয়ম হয়েছে, দিন কয়েক অন্তর সেই সব বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেবেন সিভিক ভলান্টিয়ার বা গ্রামীণ (ভিলেজ) পুলিশের কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়, প্রতিবন্ধীরা যাতে সহজে যাতায়াত করতে পারেন, সে জন্য জেলার ১৯টি থানায় ‘র্যাম্প’ ও হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রবীণ নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য ২০০৯ সালে কলকাতা পুলিশ ‘প্রণাম’ প্রকল্প তৈরি করেছিল। তার পরে নানা জেলায় সে ধরনের উদ্যোগ হয়েছে। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের পাশে থাকতে ‘সহায়ক’ নামে এই প্রকল্প রাজ্যে ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের।
জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের কথায়, ‘‘প্রতিবন্ধীরা যাতে নির্ঝঞ্ঝাটে থানায় আসতে পারেন, সে জন্য প্রতিটি থানায় বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের সাহায্য করতে প্রতি থানায় এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কী-কী সরকারি সুবিধা পাবেন, তা জানানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিটি থানায় প্রয়োজনীয় তথ্য ‘ব্রেইল’-এ লিখে টাঙানো হয়েছে।’’ প্রতিবন্ধীদের এ সব সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানাতে এবং সাহায্য করতে থানাগুলিকে বিশেষ শিবির করার নির্দেশও দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৭,৬৪৩ জন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের সম্পাদক সুব্রত সিংহ বলেন, “পুলিশ এ ভাবে পাশে থাকলে প্রতিবন্ধীরা সাহস পাবেন, প্রতিবাদ করার ভাষা পাবেন। তবে এই উদ্যোগ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”