এলাকার একটি জমির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলছিল কিছু দিন ধরে। একটি পথ দুর্ঘটনার জেরে সেই বিরোধই প্রকাশ্যে চলে এল। বচসা থেকে মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন খোদ এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ ওই ওয়ার্ডের মহিলা সভানেত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের জানা গেটের কাছে। গুরুতর জখম তৃণমূল কাউন্সিলর এবং ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল মহিলা সভানেত্রী— দু’জনেই। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের জানা গেটের সামনে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ সাঁতরাগাছি ব্রিজের দিক থেকে আসা একটি লোহা বোঝাই ট্রেলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে পুলিশের কিয়স্কে ধাক্কা মারে। তাতে কিয়স্কটি গুঁড়িয়ে যায়। জখম হন ভিতরে থাকা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্মী ও সিটি পুলিশের এক ভলান্টিয়ার। তার পরে ট্রেলারটি সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাপ-ক্যাবে ধাক্কা মেরে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে। ফলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহত হন অ্যাপ-ক্যাবের চালকও। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী সুলেখা দে স্থানীয় যুব তৃণমূলের কয়েক জন সমর্থককে নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন। সুলেখাদেবী দক্ষিণ হাওড়া যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থ বসুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তৃণমূল সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলের কাছেই হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট-এর একটি জমির দখল নিয়ে পার্থর সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শ্যামল রায় গোষ্ঠীর কিছু দিন ধরেই গোলমাল চলছিল। পুলিশ জানায়, ওই দিন ঘটনাস্থলে একটু বেশি রাতে দলবল নিয়ে আসেন শ্যামলবাবু। এর পরেই কাউন্সিলর শ্যামলবাবুর সঙ্গে বিরোধী গোষ্ঠীর বচসা বেধে যায়। যা গড়ায় হাতাহাতিতে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে লাঠিসোটা ও ইট নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। মারামারির সময়ে আহত হন শ্যামলবাবু এবং সুলেখাদেবী, দু’জনেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও পুলিশবাহিনী নামানো হয়। শেষে রাত ১২টার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ জানায়, মারামারির সময়ে আহত কাউন্সিলরকে রাতে দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সুলেখাদেবীকে ভর্তি করানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। শুক্রবার কাউন্সিলরের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।