রাজ্যে দুরমুশ হতে হচ্ছে তৃণমূলের হাতে। আবার তারই মধ্যে বিরোধী পরিসরে বড় চেহারা নিচ্ছে বিজেপি। এই বিপদের মোকাবিলায় চলতি স্লোগান যে খুব কাজে আসছে না, সেই ব্যর্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেই শুরু হল পঞ্চায়েত ভোটের পরে সিপিএমের প্রথম রাজ্য কমিটির বৈঠক। রাতে শহরে এসে আজ, বৃহস্পতিবার বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির। সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীও গঠিত হওয়ার কথা আজ।
আলিমুদ্দিনে বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্য কমিটির বৈঠক শুরু আগে মৌলালির রামলীলা ময়দানে ১১৭টি গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও-র সমাবেশেও তৃণমূল এবং বিজেপিকে রুখতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। বিপিএমও-র আহ্বায়ক শ্যামল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বর্ষার মরসুম পেরিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে আবার পুরোদমে জেলায় জেলায় ওই মঞ্চের তরফে কর্মসূচি চলবে। মোদী সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জনবিরোধী নীতি’র প্রতিবাদ জানাতে দিল্লিতে সমাবেশ করেছে ছয় বাম দল। তারই অঙ্গ হিসেবে কলকাতায় বিপিএমও-র উদ্যোগে সভা হয়েছে। তাতে যোগ না দিয়ে তামিলনাড়ুতে পুলিশের গুলিচালনার প্রতিবাদে ধর্মতলায় পথ অবরোধে করেছে এসইউসি।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র যে রিপোর্ট এ দিন রাজ্য কমিটিতে পেশ করেছেন, সেখানে এ বারের পঞ্চায়েতে ভোটে ‘নজিরবিহীন’ নানা ঘটনার কথা বলা হয়েছে। এমন নির্বাচন থেকে যে সুর্নিদিষ্ট কোনও বিশ্লেষণ সম্ভব নয়, তা-ও বলা হয়েছে। রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় সন্ত্রাস এবং নানা প্রতিকূলতার মোকাবিলা করে অনেক বাম প্রার্থী শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থেকেছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে মার খাওয়ার পরে লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের সক্রিয়তা ধরে রাখাই এখন সিপিএমের চিন্তা। ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে পথে থাকা ছাড়া আর কোনও সহজ পথ নেই বলেও সূর্যবাবু বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন।
দলের রাজ্য কমিটির কিছু সদস্যের মত, তৃণমূলের মোকাবিলা করতে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিই সক্ষম— এই ধারণার বশবর্তী হয়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের অনেকেও গেরুয়া শিবিরকে সমর্থন করছেন। যে কারণে সভা-সমাবেশে ভিড় হলেও ভোটে বামেদের রক্তক্ষরণ কমছে না। ঠিক কোন রাজনৈতিক কৌশলে এই ধস ঠেকানো যাবে, তা নিয়েই উদ্বেগে গোটা দল।