মুদ্রা যোজনায় লাভবান পশ্চিমবঙ্গ

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর ‘মুদ্রা যোজনা’য় যে সব রাজ্যে সবচেয়ে বেশি লোক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পেয়েছেন, সেগুলির তালিকায় প্রথম তিনের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তামিলনাড়ু আর ভোটমুখী কর্নাটকের পরেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৯
Share:

মমতার রাজ্যে নরেন্দ্র মোদীই রোজগারের ব্যবস্থা করছেন বলে দাবি বিজেপির। এই প্রচারে তাদের হাতিয়ার ‘মুদ্রা যোজনা’র পরিসংখ্যান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর ‘মুদ্রা যোজনা’য় যে সব রাজ্যে সবচেয়ে বেশি লোক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পেয়েছেন, সেগুলির তালিকায় প্রথম তিনের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তামিলনাড়ু আর ভোটমুখী কর্নাটকের পরেই।

Advertisement

১ কোটি ১৪ লক্ষের বেশি লোক পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের অধীনে ঋণ নিয়েছেন। আর এর সিংহভাগ ঋণই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিন বছর ধরে বিজেপি প্রচার করছে, যত জন ঋণ পেয়েছেন, তত জনেরই কর্মসংস্থান হয়েছে। লোকসভার আগে
এই রাজ্যওয়াড়ি হিসেব তুলেই বেকারি নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর দল। গত কালই মুদ্রা প্রকল্পে সুবিধে পাওয়া একশোর বেশি ব্যক্তিকে গোটা দেশ থেকে দিল্লিতে নিজের বাড়িতে জড়ো করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আগে তিনি দাবি করেছিলেন, পকোড়া বেচে ২০০ টাকা উপার্জনও রোজগার। গত কাল তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মুরগি থেকে মাজন বেচে মানুষ কী ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আর সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের পাশাপাশি এই ‘ব্যক্তিগত’ (পার্সোনাল) ক্ষেত্রকেই তাঁর সরকার কতটা জোর দিতে চাইছে। এই এক প্রকল্পের মাধ্যমেই এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে চাইছে মোদী সরকার।

বিজেপির এক সূত্রের দাবি, ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে দেশে সাড়ে ৪৮ শতাংশের মতো মহিলা। এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ৭৫% মহিলাই ঋণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন। দলিতের সংখ্যা প্রায় ১৭%। এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত দলিতদের ১৮% মুদ্রা থেকে লাভবান হয়েছেন। ১৯ শতাংশের সামান্য বেশি সংখ্যালঘু। মুদ্রা যোজনার অন্তর্ভুক্ত সংখ্যালঘুদের ৩৯% সুফল পেয়েছেন। বিজেপির নেতার মতে, প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ স্লোগান আক্ষরিক অর্থেই এই প্রকল্পে রূপায়িত হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য সূত্রের পাল্টা দাবি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংখ্যার দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ তালিকার শীর্ষে। ২০১৭ সালে ৪৭,৩০০ উদ্যোগ-আধার নথিবদ্ধ হয়েছিল। ওই বছরে এই ক্ষেত্রে ২,০৮,০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। শেষ ছ’বছরে রাজ্যে এই ক্ষেত্রে ১,৬৫,০০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। ভিত্তি মজবুত হওয়ার ফলেই মুদ্রা যোজনা সফল হয়েছে।

রাহুল গাঁধীরা প্রচার চালাচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতিমাফিক বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেননি। উপরন্তু নোটবন্দি-জিএসটি-র পরে রোজগার ধাক্কা খেয়েছে। বিজেপির নেতাদের পাল্টা দাবি, নোটবন্দি-জিএসটি-র পরে রোজগারের রূপান্তর হয়েছে। ব্যাঙ্কের মাধ্যম‌ে ভাতা ও অন্যান্য সুবিধে দেওয়া হচ্ছে। নীতি আয়োগের হাতে থাকা রোজগারের হিসেব প্রকাশিত হলে স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement