প্রতীকী ছবি।
জবাবদিহি বলুন বা কারণ দর্শানো (‘শো-কজ়’), শীর্ষে কংগ্রেস। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। অনেক দূরে থেকে তৃতীয় সিপিএম। তা থেকে কিছুটা পিছিয়ে চতুর্থ তৃণমূল। চুম্বকে এটাই হল রাজ্যে ভোটে খরচের হিসেব না-দেওয়ার দলগত জবাবদিহির তালিকা।
নিয়ম অনুসারে পুর বোর্ড গঠনের ছ’মাসের মধ্যে কমিশনে খরচের হিসেব পেশ করতে হয় প্রার্থীদের। কোনও প্রার্থী হিসেব না-দিলে তাঁর কাউন্সিলর বা পুর-প্রতিনিধির পদ খারিজ হয়ে যাবে। হিসেব না-দেওয়া প্রার্থী তিন বছর পুরভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে প্রথমে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ‘শো-কজ়’ করা হয়। তার জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না-হলে শাস্তির মুখে পড়তে হয় প্রার্থীকে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন ১০৮৪ জন। শো-কজ়ের আগেই খরচের হিসেব দেন ৬০১ জন প্রার্থী। হিসেব না-দেওয়া ৪৮৩ জন প্রার্থীকে শো-কজ় করেছে কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে শো-কজ়ের কাজ শুরু করে তারা।
২০১৫ সালের পুরভোটে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন ১৪৩ জন। তাঁদের মধ্যে ৬৩ জন নিয়ম মেনে খরচের হিসেব জমা দিয়েছিলেন। বাকি ৮০ জন শো-কজ়ের চিঠি পেয়েছেন। তার পরে এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’জন হিসেব জমা দিয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ৫৭ বিজেপি প্রার্থী শো-কজ়ের চিঠি পেয়ে হিসেব জমা দিয়েছেন মাত্র ছ’জন। কেন্দ্রের শাসক দলের ১৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে নিয়ম মেনে হিসেব দিয়েছেন ৮৫ জন।
নিয়ম মানার ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং বিজেপিকে কয়েক যোজন পিছনে ফেলে দিয়েছে সিপিএম এবং তৃণমূল। ওই দু’দলের কয়েক জন বাদে সকলেই নিয়ম মেনে নির্বাচনী খরচের হিসেব দিয়েছেন। ২০১৫ সালের পুরভোটে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন ১০৬ জন। তাঁদের মধ্যে ন’জন বাদে ৯৭ জন সময়মতো হিসেব দেন। শো-কজ়ের চিঠি পাওয়া ন’জনের মধ্যে পাঁচ প্রার্থী ইতিমধ্যেই হিসেব দিয়েছেন।
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ১৪৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩৭ জন হিসেব দিয়েছিলেন। বাকি সাত জন হিসেব না-দেওয়ায় তাঁদের শো-কজ় করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। তার পরে তিন প্রার্থী হিসেব জমা দিয়েছেন। ৪৮৪ জন নির্দল প্রার্থীর মধ্যে হিসেব না-দেওয়ায় শো-কজ় করা হয়েছে ৩০৪ জনকে। শো-কজ় করার পরে
নির্বাচনী মাত্র পাঁচ জন নির্দল প্রার্থী হিসেব দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৪৮৩ জন প্রার্থীকে শো-কজ় করার পরে এ-পর্যন্ত হিসেব পেশ করেছেন মাত্র ২১ জন। জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা হিসেব জমা দিতে শুরু করেছেন। হয়তো কয়েক দিনের মধ্যে আরও অনেকে জমা দেবেন। তবে নির্দল প্রার্থীরা কতটা হিসেব দেবেন, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।