বিলি হচ্ছে এই ফর্ম। নিজস্ব চিত্র
পুরভোটে প্রার্থী হতে গেলে লিখতে হবে রচনা। বিষয় হচ্ছে ‘ভারতমাতা’। এছাড়াও গুছিয়ে লিখতে হবে ‘প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা’ এবং ‘ভন্ড ধর্মনিরপেক্ষতা’ নিয়ে। তার ভিত্তিতেই প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করবে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রার্থী হওয়ার পরীক্ষায় ভারতমাতা বা ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে লেখাগুলি দেখে নম্বর দেবেন সঙ্ঘ পরিবারের ‘শিক্ষক’রা। জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত চারটি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। সেই পুরভোটে যাঁরা বিজেপির প্রার্থী হতে চান তাঁদের সকলকে ফর্ম পূরণ করতে হবে। সেখানেই ৮ নম্বর কলমে ভারতামাতা, ভন্ড ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এক পাতার ফর্ম হলেও বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাগজে লিখে জুড়তে হবে।
দল সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই ফর্ম তৈরি হয়েছে। জলপাইগুড়ি, মালবাজার ছাড়াও কোচবিহারের হলদিবাড়ি এবং মেখলিগঞ্জ পুরসভা বিজেপির জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলার আওতায় পড়ে। চার পুরসভাতেই এই ফর্ম বিলি করতে শুরু করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, আবেদনকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করে ফর্ম তৈরি করা হয়েছিল। পরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নির্দেশে ভারতমাতা সম্পর্কে লেখা ও অন্য বিষয়গুলি ঢোকানো হয়েছে। বিজেপির প্রার্থী হওয়ার ফর্মে আবেদনকারী অতীতে অন্য কোনও দলে ছিলেন কিনা, তাঁর পরিবারের কেউ অন্য কোনও দল করেন কিনা সে সব প্রশ্নও জানতে চাওয়া হয়েছে। পরিবারের কেউ অন্য দলে যুক্ত থাকলে তার বিশদ বিবরণও জানাতে হবে।
বিজেপির একটি অংশের দাবি, প্রচার শুরু হতেই বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলে আক্রমণ করবে বিরোধীরা। এ বারের ভোটে অন্য দল থেকে আসা নেতা-কর্মীদেরও প্রার্থী করতে হবে। তাঁরা ওই আক্রমণের জবাব দিতে কতটা প্রস্তুত তা ঝালিয়ে দেখতেই পরীক্ষায় এমন বিষয়গুলি নিয়ে রচনা লিখতে বলা হয়েছে। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “বিজেপির অভ্যন্তরীণ নথি সংবাদমাধ্যমের হাতে যাওয়ার কথা নয়। যে নথির কথা বলছেন, তা আসল নাকি ভুয়ো তা যাচাই করে দেখতে হবে। তারপরেই মন্তব্য করব।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “বিজেপি যে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে, ওরা যে ভাবে ভারতমাতাকে ব্যাখ্যা করে তা পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক। বিজেপিতে কেউ যোগ দিলে তাঁরও মগজধোলাই করে সে সব ভাবনা ঢোকানো হয়।’’