কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া নোটিস। ছবি: সংগৃহীত।
আবার নয়া বিতর্ক রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচন ঘিরে। বৃহস্পতিবার সকালে ভোটগণনা নিয়ে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে নয়া অভিযোগ চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর সদস্যদের। অভিযোগ উঠেছে, বৃহস্পতিবার সকালেই কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিস দিয়ে গণনা বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। প্রথমে দু’ঘণ্টা গণনা বন্ধ রাখার কথা জানানো হলেও পরে নোটিস দিয়ে জানানো হয়, দুপুর ২টো পর্যন্ত বন্ধ থাকবে গণনা প্রক্রিয়া। জানানো হয়েছে, গণনা শুরু হবে ২টোর পর থেকে। পর্যাপ্ত পরিমাণ কর্মীর ‘অভাবে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও এই নোটিসে জানানো হয়েছে। আর কর্তৃপক্ষের এই নোটিস ঘিরেই তৈরি হয়েছে যাবতীয় উত্তেজনা।
শাসকগোষ্ঠী-বিরোধী চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর চিকিৎসকদের দাবি, ভোটগণনা শুরু হলেও সকাল ৮টায় গণনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই পুরো প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি থাকার অভিযোগ এনেছেন যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকেরা। গণনা বন্ধ থাকাকালীন যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকদের ভিতরে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, শাসক শিবিরের প্রার্থীরা পিছিয়ে আছে বুঝতে পেরেই কি তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত? ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর চিকিৎসক তথা প্রার্থী অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের সকালে ঘণ্টা দু’য়েক গণনা বন্ধ রাখার কথা জানানো হলেও পরে বলা হয় দুপুর পর্যন্ত গণনা বন্ধ থাকবে। ওরা (শাসক শিবির) পিছিয়ে আছে বলেই কি ভোটগণনা পিছিয়ে দেওয়া হল?’’
‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর তরফে আরও অভিযোগ আনা হয়েছে যে, একাধিক ব্যালট বক্সে নাম নেই অর্জুনের। পরিবর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা চিকিৎসক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ির নাম এক নম্বর ব্যালট ছাড়াও একাধিক ব্যালটে রয়েছে। এই মর্মে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসারকে পুরো বিষয়টি ইমেল করে জানানো হয়েছে বলেও অর্জুন জানিয়েছেন। ব্যালটের ফরেন্সিক তদন্তের দাবিও করেছেন যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি পুরো নির্বাচন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও আনা হয়েছে যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে।
যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেই বিবৃতিতে যৌথ মঞ্চের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই শাসকপন্থী শিবিরে বাইরে থেকে অনেক লোকজনকে জড়ো করা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে পারে বলেও তাঁরা দাবি করেছেন।
যদিও তৃণমূলপন্থী শিবিরের প্রার্থী, চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়ের দাবি, হেরে যাওয়ার ভয়েই শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কাল সারারাত ধরে গণনা হয়েছে। গণনাকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ার কারণে ছ’ঘণ্টা গণনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওঁরা জিততে পারবেন না জেনেই এই সব মিথ্যা অভিযোগ আনছেন।’’