নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের কান ধরে ওঠবোস করাচ্ছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।
করোনার সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই রাজ্যে বেশ কয়েকটি স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। অন্য রাজ্যে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত এলাকাগুলিকে ‘হটস্পট’ নামকরণ করা হলেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের চিহ্নিত এলাকাগুলিকে ‘স্পর্শকাতর’ নামে অভিহিত করেছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, যে এলাকাগুলিতে খুব কম ভৌগোলিক ব্যবধানে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, সেই জায়গাগুলোকেই স্পর্শকাতর বলা হচ্ছে। যেমন, কালিম্পং। ওই জেলাতে একই পরিবারের ১১ জনের মধ্যে সংক্রমণ হয়েছে। তেমন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা। সেখানেও একটি বিয়ে বাড়ি থেকে সাত জনের সংক্রমণ হয়েছে।
এ ভাবেই সংক্রমণের উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে বিরাটি, বেলঘড়িয়া, হাওড়া এবং কলকাতার কয়েকটি এলাকায়। রাজ্য প্রশাসন ওই চিহ্নিত জায়গাগুলো পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে সিল করা হয়েছে বলে মানতে নারাজ। তাঁদের কথায়, ওই নির্দিষ্ট এলাকাগুলিতে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে।
হাওড়ার রাস্তায় জীবাণুমুক্তকরণের কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই চলে আসছে করোনাভাইরাসের টিকা! দাবি অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীর
যেমন হাওড়া পুর এলাকার কয়েকটি এলাকা। হাওড়া হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা, ফোরশোর রোডের একটি অংশ, উত্তর হাওড়ার কয়েকটি অংশ, মল্লিক ফটক এলাকা। এ রকম প্রায় ৩০টি ঘনবসতি পূর্ণ গলি শনিবারই চিহ্নিত করে আলাদা করা হয়েছে।
ব্যারিকেড করা হয়েছে ওই এলাকাগুলিতে ঢোকা বেরনোর রাস্তায়। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে রাস্তাঘাট। সেই সঙ্গে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে মানুষের যাতায়াত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করা হচ্ছে বাসিন্দাদের। জমায়েত করতে দেখা গেলে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। রবিবার মল্লিক ফটক এলাকায় কয়েক জন যুবককে পাকড়াও করে পুলিশ। বাইরে ঘুরে বেড়ানোর কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ না থাকায় তাঁদের রীতিমতো কান ধরে ওঠবোস করায় পুলিশ।
বাজারহাটও বেশির ভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েকটি ছোট বাজার খোলা থাকলেও, সেখানে পুলিশ কড়া নজর রেখেছে যাতে কোনও জমায়েত না হয়। হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি আনাজ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন ভাঙায় বাধা, তলোয়ারের কোপে পুলিশের হাত ছিন্ন পঞ্জাবে
ঠিক একই রকম নিয়ন্ত্রণ বিধি চালু করা হয়েছে বিরাটি এলাকার একটি ওয়ার্ডে এবং বেলঘড়িয়ার একটি এলাকায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, এলাকা চিহ্নিত করার মূল উদ্দেশ্য যাতে ওই এলাকার মানুষের সংস্পর্শে অন্য এলাকার কেউ না আসেন। পাশাপাশি ওই এলাকার সব বাসিন্দার যাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায় এবং নজর রাখা যায় স্বাস্থ্যের উপর। ওই মূল উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে যেখানে যেমন নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন তাই করছে প্রশাসন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর কোনও একটি এলাকা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে। আবার সংযোজিত হতে পারে নতুন এলাকা। তবে তা কোনওভাবেই এলাকা ‘সিল’ বলে আখ্যা দিতে নারাজ প্রশাসনের কর্তারা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)