ছবি এএফপি।
রেড এবং অরেঞ্জ জ়োনের অন্তর্গত কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলি পুরোদস্তুর ‘তালাবন্ধ’ (লকডাউন) থাকবে। অন্যত্র নানা বিধিনিষেধ মান্য করে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা যাবে দোকানপাট। সোমবার রাত ৮টা নাগাদ এই মর্মে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। সোমবার থেকেই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে তাতে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এ দিন বলেন, কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরে দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও বিধিনিষেধ না-মানলে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থা নেবে সরকার। অত্যাবশ্যক পরিষেবাগুলি যেমন চলছিল, তেমনই চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে ৫১৬টি কন্টেনমেন্ট এলাকা রয়েছে। তার বেশির ভাগই রেড জ়োনে। বাকি অল্প কিছু অরেঞ্জ জ়োনে। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত কন্টেনমেন্ট এলাকা ৩১৮টি। এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনায় ৮১টি, হাওড়ায় ৭৪টি, হুগলিতে ১৮টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৯টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫টি, মালদহে ৩টি, নদিয়া এবং দার্জিলিঙে দু’টি করে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, জলপাইগুড়ি এবং কালিম্পঙে একটি করে কন্টেনমেন্ট এলাকা রয়েছে। সকলের অবগতির জন্য কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পুরসভা-সহ জেলা পুলিশ-প্রশাসনের ওয়েবসাইটে কন্টেনমেন্ট এলাকার তালিকা পাওয়া যাবে। এই তালিকা প্রতিদিন পরিমার্জিত হবে বলেও স্বরাষ্ট্রসচিব জানান।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সরকারের তরফে বলা হয়েছে, কন্টেনমেন্ট এলাকায় লকডাউন কঠোর ভাবে বলবৎ থাকবে। অন্যত্র একক (স্ট্যান্ড অ্যালোন) দোকানপাট খোলা যাবে। এই সব এলাকায় মিষ্টির দোকান খোলার সময়সীমাও সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত হচ্ছে। চা-পানের দোকান খুললেও সেখানে বসে আড্ডা দেওয়া যাবে না। শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্সের দোকানও খোলা যাবে না, স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। গ্রিন জ়োনে সেলুন ও পার্লার খোলার অনুমতি দিলেও রাস্তার হকার্স কর্নার বা ফুটপাতে কেনাবেচা সম্পূর্ণ ভাবেই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
গ্রিন জ়োনে থাকা জেলার সীমানার মধ্যে কুড়ি জন যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে। গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োনে থাকা এলাকায় খনির কাজকর্ম নিয়ম মেনে করা যাবে। গ্রামীণ এলাকার গ্রিন জ়োনে নির্মাণ শিল্পের কাজ চললেও শহুরে এলাকায় শ্রমিক-কর্মীদের কাজের জায়গায় রেখেই কাজ করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক এবং কলকাতার ক্ষেত্রে পুর কমিশনারের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
আরও পড়ুন: কোন জেলায় করোনা আক্রান্ত কত, মৃত কত, তালিকা দিল রাজ্য সরকার
২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে বেসরকারি অফিস চালানো যাবে। তবে খুব দরকার না-হলে বাড়ি থেকেই কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছেন মুখ্যসচিব। তাঁর মতে, ‘‘এত দিন ধরে সবাই কষ্ট করেছেন, তা যেন এক দিনে ব্যর্থ না হয়।’’ দোকানপাটের সঙ্গেই ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস-সহ সর্বত্রই সাত জনের বেশি জমায়েত যে করা যাবে না, তা এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সহায়তা চায় তৃণমূল, বিজেপি রাজ্যে
বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে এ দিন থেকেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে তৃতীয় দফার লকডাউন। তা অর্থনীতির জন্য ভাল হলেও লকডাউনের উপরে খারাপ প্রভাব পড়ার ‘ভয়’ রয়েছে। সেই বাধ্যবাধকতার মধ্যেই রাজ্যের মানুষের ভাল রাখার জন্য ধীরে ধীরে পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, শিল্প ও শিল্পোদ্যোগ খোলার জন্য ১০,০৯৬টি আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৫,৩৬২টি খারিজ হয়েছে। অনুমোদন হয়েছে ৪,৩৪০টি। ৩৯৪টি আবেদন পরীক্ষা চলছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)