ছবি: সংগৃহীত।
নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে স্বেচ্ছায় গাছের উপর হাতি তাড়ানোর মাচায় ঠাঁই নিয়েছিলেন চেন্নাইফেরত সাত যুবক। কয়েক দিন এ ভাবে কাটানোর পর শনিবার ওই যুবকদের গাছ থেকে নামিয়ে দিল স্থানীয় প্রশাসন।
মাস কয়েক আগে চেন্নাইতে কাজ করতে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের গেরুয়া পঞ্চায়েতের ওই সাত বাসিন্দা। তবে, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ঘরে ফিরতে চাইছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই সময়েই গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। ঘরে ফেরার পথে গত রবিবার তাঁরা আটকে পড়েন খড়্গপুর স্টেশনে। কোনও রকমে সেখান থেকে গাড়ি করে ফেরেন নিজেদের গ্রামে। গ্রামে ফিরেই থানায় যান সাত যুবক। এর পর সেখান থেকে সোজা হাসপাতালে। চিকিৎসকের পরামর্শ, থাকতে হবে ১৪ দিনের গৃহ পর্যবেক্ষণে। তাতেই বিপাকে পড়েন ওই যুবকেরা। গ্রামে আলাদা ভাবে থাকার ব্যবস্থা নেই। শেষমেশ উপায়ও বার করে ফেলেন গ্রামবাসীরা!
হাতি তাড়াতে বা তাদের উপর নজর রাখতে গাছে যে মাচা বাঁধা ছিল, তাতেই ঠাঁই নেন ওই যুবকরা। করোনার আতঙ্কে শিহরিত গ্রামের লোকেরা জানিয়েছেন, ওই যুবকদের বাড়ির লোকজন তাঁদের জন্য গাছের নীচে রান্নার সামগ্রী রাখার ব্যবস্থা করে দেন। যাতে প্রয়োজনে গাছ থেকে নেমে নিজেরাই খাবার তৈরি করতে পারেন।
আরও পড়ুন: রাজ্যে আরও ২ জনের করোনা, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭
আরও পড়ুন: গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার নিয়ম কী কী? পরিবারের সদস্যরাই বা কী করবেন? জেনে নিন
ওই যুবকদের এক জন চেন্নাইফেরত বিজয় সিংহ লায়া বলেন, “আমরা সাত জনই সুস্থ ছিলাম। কোনও অসুবিধাই হচ্ছিল না।” ভাঙিডি গ্রামের এক বাসিন্দা যুধিষ্ঠির সিংহ লায়া জানিয়েছেন, গ্রামের লোকেরাই ওঁদের জন্য গাছের উপর মাচা করে দিয়েছিলেন। দিনের বেলায় নীচে নেমে রান্না করে ফের মাচাতেই রাত কাটাচ্ছিলেন তাঁরা।
মাচায় দিনরাত কাটানো বিজয় বলেন, “সকলকে বলতে চাই, আমরা যে ভাবে নিয়ম পালন করেছি, সকলেই যেন তা মেনে চলেন। যাতে করোনা থেকে সকলে মুক্তি পান। সকলকে সচেতন করতেই এ ভাবে ছিলাম।” তবে ওই ব্যবস্থা বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। গাছে থাকার খবর স্থানীয় প্রশাসনের কানে যেতেই সেখানে হাজির হয় তারা। এর পর গাছ থেকে সাত যুবককেই নামিয়ে তাঁদের বাড়িতে গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়।