ফাইল চিত্র।
করোনা-আবহে জেলাগুলিতে বিভিন্ন আনাজের দাম কমছে। কিন্তু কিছুটা দাম বাড়ছে কলকাতায়। পরিস্থিতি যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য ভরসা রাখছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ ও সুফল বাংলার স্টলগুলির উপরে।
লকডাউনের মধ্যে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত পণ্য সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ রাখেনি রাজ্য সরকার। আনাজ, দুধ, ডিম, মাছ-মাংস, মুদিখানার জিনিসপত্র কেনাবেচায় বাধা নেই। ওই সব জিনিসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তবু জেলাগুলির তুলনায় শহরে আনাজের দাম কিছুটা বেশি। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে চার-ফসলি জমির মরসুমি আনাজ ছড়িয়ে পড়ে মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে। ফলে ভাঙড় সংলগ্ন সোনারপুর, গড়িয়া, বারুইপুর, যাদবপুর, বাঘা যতীনের বাজারগুলিতে তার দাম বেশ কম। চাষিরা ন্যূনতম দামে আনাজ বেচে দিচ্ছেন। কিন্তু পণ্য পরিবহণে কিছুটা সমস্যা থাকায় শহরের বাকি এলাকার বাজারে আনাজের দাম বেশি। উৎপাদক ও বিক্রেতাদের বক্তব্য, ওই সব এলাকায় জোগান স্বাভাবিক না-থাকায় দাম বেড়ে যাচ্ছে।
রাজ্যের অন্যতম বড় পাইকারি আনাজ বাজার নদিয়ার মদনপুরে। রাজ্যের প্রায় সর্বত্র চাহিদা থাকায় ধনেপাতার একটা বড় অংশ যায় এই বাজার থেকে। কিন্তু এখন তার চাহিদা তলানিতে। মদনপুর ভেন্ডার সমিতির সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ বাছা বলেন, ‘‘পাইকার না-আসায় বাজারটা শেষ হয়ে গিয়েছে। চাষিরা খুব বিপদে পড়েছেন।’’ সংশ্লিষ্ট বাজারের ভেন্ডার সমিতি জানাচ্ছে, বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ ইন্দিরা আনাজ বাজারে যান। বিহার থেকে টোম্যাটো, সজনে ডাঁটা, রাঁচী থেকে মটরশুঁটি, চেন্নাই ও বাঁকুড়া থেকে কুমড়ো এবং শিলং থেকে আদা আসে। বর্ধমান ও হুগলি থেকে আসে আলু। মদনপুর থেকে ভাগ হয়ে আনাজ যায় বিভিন্ন দিকে। লকডাউনের পরে পাইকারেরা না-আসায় তার অধিকাংশই বন্ধ। আশেপাশের পাইকারেরা কিছু আনাজ নিচ্ছেন। কিন্তু তাতে চাষিদের বিশেষ লাভ হচ্ছে না। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও গোপালনগর থেকেও আনাজ আসছে। তাতে মদনপুরের উপরে জোগানের চাপ আরও বাড়ছে।
রাজ্যের দাবি, আনাজের দাম স্বাভাবিক রাখতে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বাজারগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে। স্টল, ভ্রাম্যমাণ মিলিয়ে সুফল বাংলার ১৪টি কাউন্টার চালু আছে। সেখান থেকে সুলভে আনাজ পাচ্ছেন মানুষ। কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আনাজের জোগান স্বাভাবিক আছে। কোথাও কোথাও খুচরো বিক্রেতারা কম জিনিসপত্র কিনছেন এবং এলাকার ভিত্তিতে দাম কিছুটা বাড়িয়েই তা বিক্রি করছেন। সব ক্ষেত্রে তো প্রশাসন খড়্গহস্ত হতে পারে না! মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সর্বত্র নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’