প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্য ছিল ৫০০ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফেরা। বছর আটেকের মেয়েকে নিয়ে ৬০ কিলোমিটার হাঁটার পরে আর শরীর দেয়নি অন্তঃসত্ত্বা পূজা পান্ডের। অসুস্থ হয়ে পড়েন রাস্তায়। বীজপুর থানার পুলিশ উদ্ধার করে। খোঁজখবর করে তাঁকে ঝাড়খণ্ডের বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় পুলিশই।
বীজপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতায় কাজে এসেছিলেন পূজারা। আচমকা লকডাউন ঘোষণার ফলে বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁদের। কালীঘাট মন্দিরের কাছে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন তাঁরা। পূজার স্বামী বিকাশ পান্ডে জানান, বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে রোজই সকালে রাস্তায় বেরোতেন তিনি। কয়েক দিন আগে পূজা এবং তাঁদের মেয়ে বরখাকে নিয়ে সকালে কালীঘাট মন্দিরে যান। তাঁদের সেখানে অপেক্ষা করতে বলে গাড়ির ব্যবস্থা করা যায় কি না, খোঁজ করতে যান বিকাশ।
ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করার পরেও স্বামী না-ফেরায় মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় নামেন পূজা। পথঘাট চেনা নয়। পূজা জানান, কখনও রেললাইন ধরে, কখনও লাগোয়া সড়কপথে এগোতে থাকেন তাঁরা। রাস্তার দোকান থেকে কেনা জল এবং বিস্কুটও ফুরিয়ে যায়। এক সময় অসুস্থ হয়ে রাস্তার ধারে বসে পড়েন মা ও মেয়ে। তা নজরে পড়ে বীজপুর থানার কয়েক জন পুলিশকর্মীর। বীজপুর থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, “মহিলা এবং তাঁর মেয়েকে খাবার দেওয়া হয়। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে। এক দিন পরে তাঁর স্বামীর মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।” পুলিশ জানিয়েছে, বিকাশ জানান, একটি লরিতে ফেরার ব্যবস্থা হয়েছিল। “মন্দিরে ফিরে দেখি, ওরা নেই। সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক খুঁজেছি। শেষে রাতে লরিতে বাড়ি ফিরি,” বলেন বিকাশ।
আরও পড়ুন: জেল থেকে শ্মশানে, ছেলের শেষকৃত্য বৃদ্ধের
ঝাড়খণ্ড সরকার আগে থেকেই ঘোষণা করেছিল, বাইরে আটকে পড়া বাসিন্দাদের এখনই রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পুলিশ জানিয়েছে, পূজাদের বাড়ি ফেরানোর সেটাই ছিল মূল অসুবিধা। একটি অ্যাম্বুল্যান্সে শুক্রবার রাতে ঝাড়খণ্ড সীমানায় তাঁদের নিয়ে যায় বীজপুর থানার পুলিশ। বিকাশ এবং পূজার দাদা রাজু বর্মাও অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এসেছিলেন। পূজাদের সঙ্গে পুলিশ থাকায় তেমন অসুবিধা পোহাতে হয়নি তাঁদের।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)