পুলিশ ছাড়া কারও রক্তদানের অনুমতি নেই রাজ্যে।—ছবি রয়টার্স।
করোনা-যুদ্ধে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাব নিয়েই চলছিল বিরোধী বামেরা। সেই আবহে তাল কাটল রক্ত দেওয়াকে ঘিরে সংঘাতের জেরে।
সরকারি ঘোষণার বাইরে গিয়ে রক্ত দেওয়ার আয়োজন করতে গিয়ে পুলিশি পদক্ষেপের মুখে পড়তে হল উদ্যোক্তা বামেদের। তাঁদের দাবি, থানায় গিয়ে ‘লকডাউন ভাঙার দায়ে’ দুঃখপ্রকাশ করে আটকদের ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে। পুলিশ ছাড়া আর কেউ এমন সঙ্কটের সময়ে রক্ত দিতে পারবে না, এই নিয়মের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী।
রাজ্য জুড়ে এখন রক্তের সঙ্কট চলছে। বিপন্নদের সাহায্যের জন শিবির খুলে রক্ত দিতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। প্রথমে সরকারি নির্দেশ ছিল, ৩০ জনের বেশি লোককে নিয়ে রক্তদানের শিবির করা যাবে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, রবিবার ছাড়া অন্য দিন পুলিশই শুধু রক্তদানের ব্যবস্থা করতে পারবে, অন্য কেউ নয়। তার পরেই সর্বত্র রক্তদানের আয়োজন বাতিল করা হচ্ছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার ১১১ নম্বর ওয়ার্ডে শুক্রবার বামেদের আয়োজনে রক্তদানের ব্যবস্থা হয়েছিল। সংগৃহীত রক্ত ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নিয়ে রওনা দিতেই পুলিশ এসে উদ্যোক্তাদের দু’জনকে আটক করে বাঁশদ্রোণী থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, ওই শিবিরের অনুমতি ছিল না। লকডাউনের সময়ে বাইরে জটলাও হচ্ছিল। পরে স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য থানায় যান।
পক্ষান্তরে বামেদের বক্তব্য, রক্তদানের কথা জানিয়ে পুরসভা এবং পুলিশকে চিঠি দেওয়া হলে কেউই লিখিত ভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কথা জানাচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতেই সুজনবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছেন, সঙ্কটের সময়ে বিপর্যস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য ছাত্র-যুব এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। সম্প্রতি কলকাতা ও আশেপাশের কয়েকটি জেলায় এই রকম ৭৬টি শিবির প্রশাসন বাতিল করেছে। সুজনবাবুর মতে, পুলিশ রক্ত দিচ্ছে, নিঃসন্দেহে ভাল প্রচেষ্টা। কিন্তু অন্য কেউ রক্ত দিতে পারবে না— এই ‘স্বেচ্ছাচারী মনোভাব’ মেনে নেওয়া যায় না।
কাউন্সিলর চয়নবাবুর বক্তব্য, ‘‘লকডাউন ভাঙার জন্য থানায় দুঃখপ্রকাশ করেছি। কিন্তু পুলিশকে বলেছি, চাল চুরি করিনি, কালোবাজারিও করিনি! রক্তের আকাল চলছে বলে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বাস্তব প্রয়োজনেই রক্তের ব্যবস্থা করেছি।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)