West Bengal Lockdown

৪ দিন ধরে বাড়িতে আটক জন, রাস্তায় বাধা অর্জুনকে, আক্রমণে বিজেপি

অর্জুন সিংহ এবং জন বার্লাকে আটকানোর ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রবল তোপ দাগতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ১৯:৫৯
Share:

জন বার্লা ও অর্জুন সিংহকে ত্রাণ বিলি করতে বাধা। নিজস্ব চিত্র।

দুই সাংসদের ত্রাণ বণ্টনে ফের পুলিশি বাধা। ব্যারাকপুর লোকসভা এলাকায় বৃহস্পতিবার আটকে দেওয়া হল সাংসদ অর্জুন সিংহের গাড়ি। আর আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে পুলিশ আরও ‘কড়া’। সেখানে চার দিন ধরে প্রায় গৃহবন্দি সাংসদ জন বার্লা। হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন নির্বিঘ্নেই ত্রাণ বিলি করেছেন। কিন্তু অর্জুন সিংহ এবং জন বার্লাকে আটকানোর ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রবল তোপ দাগতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপিপুলিশের দাবি, অনুমতি না নিয়ে কেউই ত্রাণ বিলি করতে যেতে পারেন না লকডাউনের মাঝে।

Advertisement

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে প্রথম বার বাধার মুখে পড়তে হয় ১২ এপ্রিল। তার পর থেকে বার্লাকে আর বাড়ি থেকে বেরতেই দেয়নি পুলিশ। বানারহাটে তাঁর বাড়ি সব দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে পুলিশ বাহিনী। বাড়ি থেকে আর কোথাও যেতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। বৃহস্পতিবার জন বার্লা ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘১২ এপ্রিল আমি বান্দাপানি চা বাগানে যাচ্ছিলাম। ওই চা বাগান অনেক দিন ধরে বন্ধ। আমি সেখানে ত্রাণ বিলি করার জন্য রওনা দিই। পুলিশ মাঝপথে আমাকে আটকে দেয়। আমি বলেছিলাম, আমাকে যদি যেতে না দেন, তা হলে ত্রাণটা আপনারাই পৌঁছে দিন। পুলিশ তাতেও রাজি হয়নি। আমাকে ত্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়। সে দিনের পর থেকেই পুলিশ আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। আমাকে আর কোথাও বেরতে দিচ্ছে না।’’

বৃহস্পতিবার বিজেপির তরফে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে যে, আলিপুরদুয়ারের সাংসদের বাড়িকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তিনি বার বার পুলিশকে জিজ্ঞাসা করছেন যে, কেন তাঁকে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে, কেন তাঁকে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না? কিন্তু তাঁর বাড়ি ঘিরে মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীরা সে প্রশ্নের কোনও জবাব দিচ্ছেন না বলে ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনার হটস্পট কলকাতা, কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন-পুরসভা?

ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহকে পুলিশ এ দিন আটকেছে আমডাঙা যাওয়ার পথে। বাধা পেয়ে অর্জুনও গাড়ি থেকে নেমে পুলিশকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন, কেন তাঁকে আটকানো হয়েছে? সাংসদকে পুলিশ জানায়, তিনি ত্রাণ বিলি করতে যাচ্ছেন বলে তাঁরা জানাতে পেরেছেন এবং লকডাউনের মধ্যে লোকজন জমায়েত করে ত্রাণ বিলি করা যাবে না। এর পরেই অর্জুনের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পুলিশের। পরিস্থিতি তপ্ত হতে থাকে। কিন্তু পুলিশ ব্যারাকপুরের সাংসদকে এ দিন আর এগোতে দেয়নি। যাঁরা ত্রাণ বিলি করছেন, তাঁরা পুলিশের কা‌ছ থেকে অনুমতি নিয়ে করছেন বলে এক পুলিশকর্মী অর্জুনকে জানান। এই গোটা ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেন সাংসদের সঙ্গীরা। সেই ভিডিয়োও রাজ্য বিজেপির তরফে এ দিন প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।

দেখুন সেই ভিডিয়ো:

অর্জুন সিংহকে আটকানোর ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজায়বর্গীয় টুইট করে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন। আর জন বার্লা নিজেই চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত্যু ৭ থেকে বেড়ে হল ১০, সক্রিয় রোগী ১৪৪

হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে কিন্তু এ দিন বাধা পেতে হয়নি। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং সাংসদ লকেট এ দিন ত্রাণ বিলি করেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্র এলাকায়। সেই কর্মসূচিতে কোনও পুলিশি বাধার অভিযোগ ওঠেনি।

ত্রাণ বিলি করছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়

কেন অর্জুন সিংহকে আটকানো হল বা কেনই বা জন বার্লাকে চার দিন ধরে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না, নির্দিষ্ট ভাবে সে সব প্রসঙ্গে পুলিশের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, লকডাউনের মাঝে কেউ চাইলেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিলি করতে পারেন না। ত্রাণ বণ্টন করতে হলে পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement