শান্তি মিছিল টিকিয়াপাড়ায়। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
অশান্তি থামানোর জন্য শান্তি মিছিল হতেই পারে। কিন্তু করোনা-আবহে লকডাউনের অন্যতম মূল শর্ত হল ভিড় না-করা। সেই লকডাউন-বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েও কি কোনও রকম শান্তি মিছিল করা যায়? টিকিয়াপাড়ায় রবিবারের শান্তি মিছিল এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
এলাকায় শান্তি বজায় রেখে লকডাউন মানার জন্য টিকিয়াপাড়া ফাঁড়ি থেকে হাওড়া থানা র্পযন্ত পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন বেলা ১১টায় শান্তি মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, পুলিশের সঙ্গে কয়েকশো বাসিন্দা লকডাউন ও পারস্পরিক দূরত্ব বিধির পরোয়া না-করে মিছিলে যোগ দিয়েছেন। পুলিশের উদ্দেশে জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে মিছিল হয় হাওড়া থানা র্পযন্ত।
পুলিশকে আক্রমণের ঘটনায় দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করা হয়েছে— এই মর্মে হাওড়া সিটি পুলিশের প্রশংসা করে এ দিন মিছিলের ডাক দেয় স্থানীয় চার বাসিন্দাকে নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটি। মিছিলে যোগ দেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তা-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী ও এলাকার বিশিষ্ট মানুষজন। বেলিলিয়াস রোড দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় টিকিয়াপাড়ায় অনেক বাড়ির ছাদ থেকে পুলিশের দিকে ফুল ছোড়া হয়। পুলিশের প্রশংসা করে রাস্তায় টহলরত পুলিশের সামনে স্লোগান দেন স্থানীয় যুবকেরা। লকডাউন ভেঙে পুলিশকে নিয়ে এই মিছিল করায় মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আরও পড়ুন: মূক-বধির দম্পতির ভাষা বুঝতে স্বচ্ছতার আগল মাস্কে
শান্তি কমিটির সদস্য, প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তৃণমূল নেতা মহম্মদ সেলিম অবশ্য বলেন, ‘‘আজকের দিনটার জন্য পারস্পরিক দূরত্ব আর না-ই বা মানা হল! এই মিছিলের ফলে কাল থেকে এলাকায় সবাই যাতে লকডাউন বিধি মেনে চলে, তাই আর কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি।’’
আরও পড়ুন: করোনার হানা চন্দননগরেও
এই মিছিল নিয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি হেড কোয়ার্টার প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘টিকিয়াপাড়ায় যাতে লকডাউন মেনে চলা হয়, সেই জন্য এ দিন দুপুরে পুলিশ টহল চলছিল। তখনই স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের বুঝিয়ে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।’’
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে সংবিধানের ৩৫৫ ধারা (কেন্দ্রের তরফে প্রশাসনিক অধিগ্রহণ, রাজ্যের সরকার ভাঙা নয়) প্রয়োগের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে টুইটারে মন্তব্য করেছেন রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ তথা বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, স্বপন দাশগুপ্তের এ-রকম উদ্ভট মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়ে তাঁকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ নেই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)