জেলায় এই নিয়ন্ত্রণবিধি কত দিন চলবে, তা অবশ্য নির্দেশিকায় উল্লেখ করেনি রাজ্য। ছবি: পিটিআই।
করোনা ঠেকাতে নিয়ন্ত্রণবিধির পরিধি আরও বাড়াল রাজ্য। আর শুধু কন্টেনমেন্ট এলাকায় নয়, বেশ কয়েকটি জেলা শহরে কড়া লকডাউন চালুর নির্দেশ দিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্যের কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতে এখন যে নিয়ন্ত্রণ চলছে, তার মেয়াদ বাড়ল ১৯ জুলাই পর্যন্ত।
গত ৯ জুলাই থেকে কন্টেনমেন্ট এলাকার পরিধি এবং চরিত্র বদলে সেখানে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণবিধি চালু করেছিল রাজ্য। বলা হয়েছিল, সাত দিন পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রসচিবের জারি করা নির্দেশিকায় সেই নিয়ন্ত্রণ ১৯ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানোর পাশাপাশি কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার চিহ্নিত কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে এবং জলপাইগুড়ি, মালদহ, কোচবিহার, রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়ি শহরের সর্বত্র ১৫ জুলাই থেকে সার্বিক লকডাউন হবে। এই নিয়ন্ত্রণবিধি কত দিন চলবে, তা অবশ্য নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়নি।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাতে কাজও হচ্ছে। কলকাতা এবং তার আশপাশের এলাকা এবং কয়েকটি জেলা শহরে সংক্রমণের হার এখনও বেশি। তাই এই ধরনের ব্যবস্থা চালু করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই ব্যবস্থা পরিমার্জন করা হবে।’’
আরও পড়ুন: কলকাতায় প্রথম এক দিনে আক্রান্ত ৫০০ ছাড়াল, কন্টেনমেন্ট জোনে বাড়ছে লকডাউনের মেয়াদ
নির্দেশিকা
• ৯ জুলাই থেকে সাত দিনের জন্য বৃহত্তর কন্টেনমেন্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণবিধি চালু
• সেই সময়সীমা বাড়ানো হল ১৯ জুলাই পর্যন্ত
• আজ, বুধবার থেকে কড়া নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন শহরে
• কলকাতা ও তার লাগোয়া কন্টেনমেন্ট জ়োনে এবং গোটা শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মালদহ, কোচবিহার ও রায়গঞ্জ শহরে সার্বিক লকডাউন
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ৭ দিন বারাসত পুর এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। করোনা-আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। তাই বারাসত পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডই এই নিয়ন্ত্রণবিধির আওতায় আসছে। লকডাউন চলাকালীন অটো-টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে। সোম-বুধ-শুক্র-রবি— এই চার দিন খোলা থাকবে পাইকারি বাজার। তবে, ছাড় দেওয়া হয়েছে ওষুধ ও দুধের দোকানগুলিকে। এ ছাড়াও যাঁদের বাড়িতে পর্যাপ্ত ঘর ও শৌচালয় নেই, তাঁদের আইসোলেশনে থাকার জন্য বানানো হবে সেফ হোম। এ দিন মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে, সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুরসভার প্রশাসক।
আরও পড়ুন: আর্থিক লেনদেনের জালে ফেঁসে গিয়েছিলেন দেবেন্দ্রনাথ! সন্দেহ পুলিশের
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য দফতরের মঙ্গলবারের বুলেটিন অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনায় মোট আক্রান্ত প্রায় ৬,২৮৫। মৃত ১৮০। কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৫৫০। মৃত্যু হয়েছে ৫৭৬ জনের। হাওড়ায় করোনায় আক্রান্ত ৪২৩৯। মৃত ১৩৪। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৪৪৬ জন। ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, গোটা দেশের নিরিখে রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের হার ততটা উদ্বেগজনক নয়। মঙ্গলবারই স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করে এই তথ্য দিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এই হিসেব প্রমাণ করে সংক্রমণের গতি রাজ্যে ততটা প্রকট নয়।