প্রতীকী ছবি।
রবিবার দুপুরেই বাড়ি পৌঁছে যাবেন— রাজস্থান থেকে ট্রেনে ওঠার পরে ফোন করে স্ত্রীকে এ কথাই বলেছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়ি পৌঁছতে পারলেন না হরিশ্চন্দ্রপুরের বুধুয়া পরিহার (৪৯)। ট্রেনেই মৃত্যু হল তাঁর।
রবিবার সকালে মালদহে পৌঁছয় ওই ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন। জিআরপি-কে খবর দেন তাঁর সহযাত্রীরা। রেল পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। ওঠার সময়েই বুধুয়া অসুস্থ ছিলেন বলে তাঁর সঙ্গীরা জানিয়েছেন। মৃত শ্রমিকের লালারস পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েক জন শ্রমিকের লালারসও পরীক্ষা করা হবে।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মৃত্যুর দায় কেন্দ্রীয় সরকারের। প্রস্তুতি ছাড়া লকডাউন করেছে। এখন পরিকল্পনা ছাড়া শ্রমিকদের রাজ্যে পাঠাচ্ছে।’’ এ বিষয়ে বিজেপির তরফে অবশ্য কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুঃস্থ ওই শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘কী ভাবে মৃত্যু তা ময়নাতদন্তে জানা যাবে। পরিবারটি অত্যন্ত দুঃস্থ। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যাতে তাঁরা পান, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক পাড়ার বাসিন্দা বুধুয়া ২০ বছর ধরে রাজস্থানে থাকতেন। প্রথমে হোটেলে কাজ করতেন। গত তিন বছর ডিম বিক্রি করতেন। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাঁর পাঠানো টাকাতেই সংসার চলত। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হতেই ফিরতে চান। শুক্রবার মালদহগামী ট্রেনে ওঠেন। সঙ্গী শ্রমিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধুয়ার সর্দি-কাশি ছিল। শনিবার বেগুসরাইয়ে ট্রেনেই মারা যান। জেলা পরিষদের শিশু, নারী ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মার্জিনা খাতুন বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে ওঁদের সাহায্য করা হবে।’’