West Bengal Lockdown

ভিন্‌ রাজ্যে অনাহারে না মরতে হয়, দুশ্চিন্তায় বান্দ্রার শ্রমিকেরা

মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে স্থানীয় থানার পুলিশের মাধ্যমে সরকারি ভাবে দেওয়া খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন মালদহের কয়েক জন শ্রমিক। কিন্তু সহজে তা মেলেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৩২
Share:

পাশে: রবিবার মালদহের একটি ক্লাবের শিবিরে চিকিৎসা করছেন এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। নিজস্ব চিত্র

খাবার বা বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করার দাবিতে গত মঙ্গলবার মুম্বইয়ের বান্দ্রা স্টেশনের পাশে বিভিন্ন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিড় জমিয়েছিলেন। অভিযোগ, ভিড় হটাতে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। ওই শ্রমিকদের মধ্যে মালদহেরও অনেকে ছিলেন। অভিযোগ, পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁদের অনেকেই আহত হন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিনই এ বিষয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

তার পর কেটেছে চার দিন। কিন্তু বান্দ্রা-সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় থাকা মালদহের শ্রমিকদের দুর্দশা কি কেটেছে?

জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে স্থানীয় থানার পুলিশের মাধ্যমে সরকারি ভাবে দেওয়া খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন মালদহের কয়েক জন শ্রমিক। কিন্তু সহজে তা মেলেনি বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের একাংশের দাবি, প্রথম দু’দিন লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁরা কিছুই পাননি। তার আগেই সামগ্রী শেষ হয়ে গিয়েছিল। শনিবার হাতেগোনা কয়েক জন সেই খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন। ফলে বান্দ্রায় অর্ধাহার ও অভুক্ত অবস্থাতেই দিন কাটছে মালদহের বেশির ভাগ শ্রমিকের। তাঁদের আর্তি, রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে যে কোনও ভাবে যেন তাঁদের বাড়িতে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে। না হলে হয়তো ভিন্‌ রাজ্যে না খেয়েই মরতে হবে তাঁদের।

Advertisement

বান্দ্রা পূর্ব এলাকায় আটকে থাকা কালিয়াচক ২ ব্লকের বাবলার বাসিন্দা সুফিয়ান মোমিন বলেন, ‘‘লকডাউন শুরুর পর থেকেই বহুতলের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। এখন আমাদের কপর্দকশূন্য অবস্থা। ঘরে খাবার নেই। কিন্তু ফের লকডাউন ৩ মে পর্যন্ত বেড়েছে। এত দিন কী ভাবে থাকব? ভেবেছিলাম মহারাষ্ট্র সরকার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু এখনও আমরা এক ঘরে থাকা ১২ জন শ্রমিক কিছুই পাইনি।’’

বান্দ্রা পূর্ব এলাকা থেকেই ফোনে আরও এক নির্মাণ শ্রমিক, মোথাবাড়ি দাল্লুটোলার বাসিন্দা তাহুর আলি বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় বৃহস্পতিবার থেকে স্থানীয় থানার পুলিশ এসে খাদ্যসামগ্রী বিলি শুরু করে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের এত লম্বা লাইন পড়েছে যে আমরা দু’দিন লাইনে দাঁড়িয়ে খাদ্যসামগ্রী পাইনি। শনিবার ফের লাইনে দাঁড়াই। শেষ পর্যন্ত খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি।’’ তিনি ও আর এক শ্রমিক আব্দুস সালামের দাবি, ৫ কেজি আটা, ২ কেজি ডাল, ১ লিটার সরষের তেল ও কিছু মশলা দেওয়া হয়েছে।

বান্দ্রার বহরামনগরে আটকে থাকা শ্রমিক সফফর খান বলেন, ‘‘আমরা দু’টি ঘরে ৪০ জন শ্রমিক রয়েছি। মাত্র দু’জন খাদ্য সামগ্রী পেয়েছে। তা দিয়ে ৪০ জনের খাবার মাত্র তিন দিন চলবে। এর পরে কি হবে ভেবে ঘুম হচ্ছে না।’’

মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement