প্রতীকী ছবি।
কলকাতা হাইকোর্ট বকেয়া ফি মেটানোর সময়সীমা ১৫ অগস্টের পরে আর না-বাড়ানোয় অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সুবিধা হবে বলে মনে করছেন অনেক স্কুলের কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে তাঁদের আশ্বাস, এই অতিমারির আবহে যে-সব অভিভাবক সত্যি সত্যিই অসুবিধায় পড়েছেন, তাঁরা ফি ছাড়ের বিষয়ে যোগাযোগ করলে বিবেচনা করা হবে। এমনকি কিছু স্কুল জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ অগস্টের মধ্যে ফি না-মেটালে পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস বন্ধ করা হবে না। অনেক স্কুল অবশ্য এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
করোনা-কালবেলায় ফি মকুবের দাবিতে জিডি বিড়লা-সহ বিভিন্ন স্কুলের সামনে লাগাতার বিক্ষোভ হয়েছে। ফি মেটানোর সময় বৃদ্ধি না-করে হাইকোর্ট সোমবার যে-নির্দেশ দিয়েছে, জিডি বিড়লা স্কুলের তরফে কেউ সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চান না। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ফি মকুব নিয়ে স্কুলের বক্তব্য প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। তাতে বলা আছে, এই দুঃসময়ে সত্যি কোনও অভিভাবকের আর্থিক বিপর্যয় ঘটলে তাঁর সন্তানের ফি কমানোর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ১৫ অগস্টের মধ্যে ফি না-দিলে পড়ুয়ার অনলাইন ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ মুখ খোলেননি।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অনেক পড়ুয়ার অভিভাবকেরাও ফি কমানোর দাবিতে বার বার বিক্ষোভ দেখান। ওই স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘অভিভাবকদের যাতে ফি মেটাতে অসুবিধা না-হয়, তার জন্য আমরা বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। অভিভাবকেরা ফি মিটিয়েও দিচ্ছেন। এর পরেও কেউ যদি ফি দিতে না-পারেন, তাঁর সুরাহার জন্য কিছু ব্যবস্থা তো গ্রহণ করতেই হবে।’’
উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্কুলগুলি যে স্বস্তি পেয়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন ডিপিএস নর্থ কলকাতার অধ্যক্ষা সুজাতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিভাবকদের প্রতি আমাদের স্কুল মানবিক। কিছু অভিভাবক ভুল পথে চালিত হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে যাঁরা সত্যিই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, স্কুল তাঁদের কথা অবশ্যই শুনবে। ১৫ তারিখের মধ্যে কেউ ফি দিতে না-পারলে আমরা তার অনলাইন ক্লাস বন্ধ করব না। তবে কিস্তিতে হলেও ফি যে মিটিয়ে দিতে হবে, সেটাও বলব তাদের।’’
কম ফি নিয়ে যে-সব স্কুল ছাত্রছাত্রীদের সব ধরনের পরিষেবা দিচ্ছে, উচ্চ আদালতের এই নির্দেশ তাদের সত্যিই খুব আশ্বস্ত করেছে বলে মনে করছেন ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা। ‘‘যাঁদের সত্যি ফি মকুব বা কম করার দরকার, তাঁরা দরখাস্ত করলে বিবেচনা করব। কিন্তু সকলে মিলে আন্দোলনের মাধ্যমে ফি মকুব করাতে চাইলে স্কুল পরিচালনায় অসুবিধা হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মীদের বেতন দিতেও অসুবিধা হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই শিক্ষক-শিক্ষিকারাই তো পড়াবেন। তবে ১৫ তারিখের মধ্যে ফি মেটাতে না-পারলে অনলাইন ক্লাস আমরা বন্ধ করব না। অভিভাবকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, দেরি হলেও তাঁরা যেন ফি দিয়ে দেন। আমরা লেট ফাইন তুলে দিয়েছি,’’ বলেন মৌসুমীদেবী।