‘টিউশন’-এ ছেদ পড়লেও থামেনি পড়াশোনা। প্রতীকী ছবি।
‘লকডাউন’-এ বন্ধ স্কুল। ছেদ পড়েছে ‘টিউশন’-এ। ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন স্কুল। কিন্তু ‘স্মার্ট ফোন’ না থাকায় গরিব পরিবারের ছাত্রছাত্রী এবং ‘নেটওয়ার্ক’-এর সমস্যার জন্য আরও অনেকে সেই সুযোগ পুরোপুরি পাচ্ছে না বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। ইন্দাস থানার পুলিশের অবশ্য দাবি, জেলা পুলিশের উদ্যোগে স্থানীয় টিভি চ্যানেলে ক্লাসের আয়োজন করে অনেক পড়ুয়ার কাছে পৌঁছনো গিয়েছে।
ইন্দাসের ওসি বিদ্যুৎ পাল জানান, থানায় একটি ‘স্টুডিও’ করে স্থানীয় কেব্ল টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পাশাপাশি, থানার ‘ফেসবুক পেজ’-এ সেই ক্লাসের ‘লাইভ’ সম্প্রচার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রচার চলাকালীন ‘স্টুডিও’-র ফোন নম্বর দেওয়া হচ্ছে। কোনও পড়ুয়া ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ জানাচ্ছে প্রশ্ন। যাদের ‘স্মার্ট ফোন’ নেই, তারা জানাচ্ছে সাধারণ ফোন থেকে মেসেজ করে। থানার ফেসবুক ‘পেজ’-এও আসছে প্রশ্ন।
এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘লকডাউনে এত ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের সাড়া পেয়েছি, তাতে মনে হয় এই উদ্যোগ সফল। একশো দিনের বেশি সময় ধরে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে। ব্লকের যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা কোভিডের ভয় উপেক্ষা করে থানায় এসে পড়াচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’’
ওই ‘চ্যানেল’-এ নিয়মিত জীবনবিজ্ঞান পড়াচ্ছেন আকুই ইউনিয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ দলুই। তিনি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভি চ্যানেল একসঙ্গে ব্যবহার করায় অনেকে কাছে পৌঁছনো সহজ হয়েছে।’’ নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন এস এন পাঁজা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকারও। তিনি বলেন, ‘‘বহু ছাত্রছাত্রী তাদের সমস্যার কথা জানাচ্ছে। আমরা বুঝিয়ে দিচ্ছি।’’
ছোটগোবিন্দপুর এসএন পাঁজা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পডু়য়া কার্তিক রুইদাস ও রুমা রায় বলে, ‘‘আমাদের বাড়িতে টিভি নেই। পাড়ার বন্ধুর বাড়ি গিয়ে ক্লাস করেছি। খুব কাজে দিয়েছে।’’ শাসপুর ডিএনএস ইনস্টিটিউশনের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভময় নন্দী বলে, ‘‘টানা লকডাউনের সময়ে যখন টিউশন বন্ধ ছিল, তখন এই ক্লাস ভীষণ কাজে দিয়েছে।’’