কলকাতা পুলিশের রক্তদানের উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
কয়েক দিন ধরে প্রায় সুনসান থাকলেও বুধবার কলকাতা-সহ রাজ্যের পথেঘাটে প্রচুর মানুষ চোখে পড়েছে। রাজ্যে করোনা-পরিস্থিতি তৃতীয় ফেজ় বা পর্যায়ে ঢুকে পড়লে তা ঠেকানো মুশকিল হয়ে যাবে। তাই লকডাউন-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার আর্জি জানাল রাজ্য সরকার।
নিয়মবিধির তোয়াক্কা না-করে এ দিন অনেকে নিছক সময় কাটাতেই পথে নামেন। এই প্রবণতায় প্রশাসন বেশ চিন্তিত। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন লকডাউন-বিধি পুরোপুরি মেনে চলার আর্জি জানান। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দু’সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে রাস্তায় ঘুরছেন, খেলছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। বাড়ির মেয়ে-বোনের মতো অনুরোধ করছি, এ-সবের জন্য অনেক সময় পাবেন। এই ক’টা দিন বাড়িতে থাকুন। শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। জরুরি জিনিস পাওয়া যাচ্ছে বলে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। দূরত্ব রেখে সাত জন করে কেনাকাটা করুন।’’
রাজ্যের গড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি জানাচ্ছে, মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় করোনা। ‘কমিউনিটি স্প্রেডিং’ বা গোষ্ঠী-সংক্রমণ শুরু হলে মারাত্মক ফল হতে পারে। দু’সপ্তাহ সম্পূর্ণ লকডাউন জরুরি। কমিটির সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘সংক্রমণের মাত্রা যে-ভাবে বাড়ছে, তাতে বাংলা এর বাইরে থাকবে, এটা ভাবলে ভুল হবে। অযথা আতঙ্কিত না-হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’’
সরকার জানাচ্ছে, রাজ্যে ২৮৫৬ জন কোয়রান্টিন বা নিভৃতবাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। ৫৭ হাজার জনকে নিয়মিত নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ফোন করে তাঁদের তথ্য নেওয়া হচ্ছে। নিভৃতবাসে বা গৃহবন্দি থেকে অনেকে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার পরিস্থিতি ভাল বলে দাবি করে সরকার বার্তা দিচ্ছে, জরুরি পরিষেবা সচল। তাই নিয়ন্ত্রণ মানলে অসুবিধা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাল থাকতে চাইলে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করুন। আমার বাড়িতে কেউ নেই দেখার। কাউকে আসতে দিচ্ছি না। মুড়ি খাই। এক চামচ ভাত, আলু-ডাল সিদ্ধ করে নিচ্ছি।’’
কলকাতা পুলিশের রক্তদানের উদ্বোধনে পুলিশের প্রশংসা করে মমতা বলেন, ‘‘মানুষকে বোঝাতে হবে, যত বেশি করে লকডাউন সফল করতে পারব, আগামী দু’সপ্তাহে করোনার ততটাই মোকাবিলা করা যাবে। দূরত্ব রেখে চলার বিধি না-মেনে গোষ্ঠী-সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা আটকানোর ক্ষমতা আমার নেই, আপনাদেরও নেই। যাঁরা বাহিনীতে রয়েছেন, চিকিৎসকদের মতোই তাঁদের ভাল থাকতে হবে।’’
রাজ্য সরকার বিভিন্ন হাসপাতালে এক লক্ষ ১১ হাজারের বেশি পিপিই, এন-৯৫-সহ দুই লক্ষাধিক মাস্ক, হাতশুদ্ধি, থার্মাল গান দিয়েছে। চিকিৎসা-প্রোটোকল পাঠানো হচ্ছে জেলায়। তাতে নির্দিষ্ট রীতি মেনে সর্বত্র একই পরিষেবা দেওয়া যাবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)