হাওড়া বামুনগাছি এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেড। ছবি: কৌশিক কোলে।
লকডাউনের সময়সীমা বাড়বে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে রাজ্যের বেশ কিছু এলাকাকে ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করে সেখানে ‘কমপ্লিট লকডাউন’ করার পথে হাটছে রাজ্যে। ওই সব এলাকায় বাইরের কেউ ঢুকতে পারবেন না। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ অন্যত্র যেতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। ‘হটস্পট’ সংলগ্ন এলাকাকে ‘ক্লাস্টর’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা অ্যাক্টিভ পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৮৯ জন। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক না হলেও, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গোড়ায় আটকে দিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সে কারণে ‘হটস্পট’ এলাকাগুলিতে করোনাভাইরাসের ‘র্যান্ডম টেস্ট’ করা হবে। যে হেতু ওই এলাকাগুলি থেকে কাউকে বাইরে বেরতে দেওয়া হবে না, তাই সংক্রমণও অনেকটাই আটকানো যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ‘ভিলওয়াড়া মডেল’ অনুসরণ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ১১টি পরিবার থেকেই ৬০জনের বেশি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। সে জন্য ‘হটস্পট’গুলি চিহ্নিত করে সেখানে কমপ্লিট লকডাউন করা হচ্ছে। ওই জায়গাগুলিতে বাজার-দোকান বন্ধ রাখা হবে। শুধুমাত্র খোলা থাকবে হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনও সামগ্রির দরকার পড়লে পুলিশ-প্রশাসন এবং স্থানীয় পুরসভা থেকে সাহায্য করা হবে। হটস্পট এলাকাগুলিতে কেউ নিয়মের তোয়াক্কা না করলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত এই প্রথম হাজার ছাড়াল, মৃত বেড়ে ২৩৯
প্রশাসনের তরফে ওই হটস্পটগুলির নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যদিও নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনার দমদম-সল্টলেক, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা-হলদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা-নয়াবাদ, নদিয়ার তেহট্ট, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ কলকাতার পণ্ডিতিয়া রোড এলাকা, হাওড়ার সালকিয়া-শিবপুর— সম্ভাব্য হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই সব এলাকার কিছু কিছু জায়গায় পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। হটস্পটগুলির আশপাশের এলাকাকে ‘ক্লাস্টার’ বলা হচ্ছে। সেখানেও সম্পূর্ণ লকডাউন না থাকলেও, কড়াকড়ি থাকবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে।
শুক্রবার নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, রাজ্যে করোনা সংক্রমণের নিরিখে ৯-১০টি জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে। প্রশাসের তরফে মানুষের অসুবিধার দিকটিও মানবিক ভাবে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় থানা এবং প্রশাসনের আধিকারিকদের ইতিমধ্যে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। কোনও সমস্যায় পড়লে, যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে দিকে মানবিক ভাবে এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘কোনও উপায় নেই। অসুবিধা হবে। কিন্তু রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)