হাওড়ার মল্লিক ফটক এলাকায় চলছে পুলিশি নজরদারি। ছবি: কৌশিক কোলে
রাজ্যে করোনা-হটস্পটগুলি চিহ্নিত করার কাজ আগেই শুরু করে দিয়েছিল প্রশাসন। এ বার সেই মতো শুরু হয়ে গেল তত্পরতা। দক্ষিণবঙ্গে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায়, শনিবার সকাল থেকেই ‘সম্পূর্ণ লকডাউন’-এর প্রস্তুতি চলছে। গাড়ি, সাইকেল, লোকজন চলাচল থেকে শুরু করে দোকান-বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ-প্রশাসন নেমে পড়েছে রাস্তায়। বহু জায়গাতেই ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
যে সব এলাকায় পুলিশের এই বিশেষ তত্পরতা নজরে পড়েছে সেগুলি হল— গোলাবাড়ি, সালকিয়া, হরগঞ্জবাজার, শিবপুর, অরবিন্দ রোড, হাওড়া ময়দান এলাকার একাংশ, ধুলাগড়ের উত্তর মল্লিকপাড়া। ধরে নেওয়া যায়, ওই জায়গাগুলিকেই ‘হটস্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যে সব রাস্তায় ব্যরিকেড দিয়ে ঘেরা হচ্ছে, সেখানে পুলিশও মোতায়েন করা হচ্ছে। তবে ঠিক কবে এবং কখন থেকে এই সম্পূর্ণ-লকডাউন কার্যকর হচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে হাওড়া জেলা প্রশাসনের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
গত ৩১ মার্চ হাওড়া হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যু হয়। সম্প্রতি ওই হাসপাতালের সুপারও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। হাওড়ার জুমুরজলায় কোয়রান্টিন সেন্টারেও রয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেসরকারি ভাবে করোনা আক্রান্তের খবর আসছে। যদিও সরকারি ভাবে এ বিষয়ে কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত বিপজ্জনক এলাকাগুলি কার্যত সিল করে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ঢোকা-বেরনো বন্ধ, খুলবে না বাজারও, রাজ্যের সম্ভাব্য হটস্পট এলাকাগুলি
হাওড়া ময়দান এলাকায় বহু জায়গাতেই ব্যারিকেড করেছে পুলিশ। ছবি- নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন- রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এই সম্পূর্ণ-লকডাউন প্রক্রিয়ার অর্থ সাধারণ লকডাউনের থেকেও বাড়তি বিধিনিষেধ আরোপ। হটস্পটগুলিতে বাজার-দোকান খোলা রাখায় বাড়তি কড়াকড়ি থাকবে। এলাকা থেকে বাইরে যেমন কাউকে বেরোতে দেওয়া হবে না, তেমনই বাইরের কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হবে না হটস্পটে। জরুরি কারণে কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে গেলে পুলিশের বিশেষ অনুমতি লাগবে। তা ছাড়া, হটস্পট এলাকাগুলোর সব বাসিন্দার মেডিক্যাল চেক-আপের ব্যবস্থাও থাকবে। এই সময় ওই এলাকাবাসীদের ঘরে ঘরে খাবার বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্যে পুলিশের তরফে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। তার জন্যে ফোন নম্বরও চালু করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। ওই নম্বরে ফোন করলে পুলিশ-পুরসভার যৌথ উদ্যোগে বেসরকারি সংস্থা তা পৌঁছে দেবেন গ্রাহকদের বাড়িতে।