ছবি: এএফপি।
করোনার জেরে তাঁরা বন্দি অন্য জেলা ও রাজ্যের কোয়রান্টিন শিবিরে। এমনই সময় বাড়ি থেকে এল বাবার মৃত্যুসংবাদ। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় রবিবার তাঁর শেষকৃত্যে শামিল হতে পারলেন না চাকুলিয়ার শিবিরে সপরিবার আটকে থাকা বড় ছেলে আসরাফুল ও মেয়ে আনোয়ারা বিবি, বা কিসানগঞ্জ ও হায়দরাবাদে কোয়রান্টিনে থাকা ছোট ছেলে, আরও এক মেয়ে-জামাই।
কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ থানার ধাপড়াহাটে বাড়ি তাঁদের। এ দিন দুপুরে সেখানেই আচমকা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় আনসার আলি মিয়াঁর (৭০)।
উত্তরপ্রদেশের কানপুরে নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন আসরাফুল, আনোয়ারা। লকডাউনের পরে পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে সেখান থেকে বাড়ির পথে রওনা দেন তাঁরা। ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন আনসারের ছোট ছেলে ও মেয়েও। লকডাউনের সময় বাড়ি ফিরতে গিয়ে তাঁরাও কোয়রান্টিন শিবিরে আটকে পড়েন। মঙ্গলবার ডালখোলায় পুলিশ আসরাফুলদের আটকে দেয়। পাঠানো হয় চাকুলিয়ার একটি কোয়রান্টিন শিবিরে। দিনভর দাদা-দিদিদের অপেক্ষায় থাকার পরে পড়শিদের সাহায্য নিয়ে বাবার শেষকৃত্য করেন সাহেবগঞ্জের বাড়িতে থাকা আসরাফুলের এক ভাই।
আরও পড়ুন: ভোট হোক বা করোনা, যুদ্ধে অগ্রবর্তী কিউআরটি
বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েই চাকুলিয়া ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আসরাফুল। খবর পেয়ে ওই কোয়রান্টিন শিবিরে যান গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিডিও কানাইকুমার রায়। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় বাবার শেষকৃত্যে শামিল হতে পারলেন না তিনি। আসরাফুল বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই আমাদের নিয়ে বাবা চিন্তায় ছিলেন। শনিবার রাতে ওঁর সঙ্গে কথা হয়। বার বার বলতেন বাড়ি ফেরার কথা।’’
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আসরাফুল, আনোয়ারাদের কোন নিয়মে কী ভাবে ছাড়া যেতে পারে তা নিয়ে এ দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও সমাধানসূত্র বার হয়নি। গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিডিও কানাইকুমার বলেন, ‘‘আসরাফুলদের জানানো হয়েছে, সাহেবগঞ্জ থানা থেকে সরকারি ভাবে মৃত্যুর বার্তা মিললে, স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে চিকিৎসক অনুমতি দিলে তবে তাঁরা ছাড়া পেতে পারেন।’’ চাকুলিয়া থানা সূত্রে খবর, যে এলাকায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, সেখানকার থানা থেকে সেই খবর নিশ্চিত করা হয়। সাহেবগঞ্জ থানা সূত্রে খবর, এ দিন রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে তাঁদের কাছে চাকুলিয়া থেকে কোনও বার্তা আসেনি।
দিনহাটা ২ ব্লকের সীমান্ত-সংলগ্ন শুকারুর কুঠি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সেউটি ২ গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান বিষ্ণু সরকার বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই আনসার আলি অসুস্থ ছিলেন। এ দিন এক ছেলেই তাঁর শেষকৃত্য করেন।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)