অর্থনীতির চাকা গড়ানোর লক্ষ্যে করোনা-সমস্যাহীন অঞ্চলে লকডাউন নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে গতিবিধি স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই। ছবি: পিটিআই।
পঞ্চম দফার লকডাউন শুধু যে কন্টেনমেন্ট জ়োনেই চলবে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়েই তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাকি সব এলাকায় গতিবিধি স্বাভাবিক হবে। এই ব্যবস্থা কত দিন বলবৎ থাকবে, আজ, সোমবার আলোচনা করে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন প্রশাসনিক কর্তারা। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতে লকডাউন চলার কথা। তবে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় ১৫ জুন পর্যন্ত তা চলবে বলে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিশেষ ট্রেন বঙ্গে পৌঁছতে শুরু করেছে। রাজ্য প্রশাসন বারে বারেই জানিয়েছে, পরিকল্পনাবিহীন ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরত পাঠানোর ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হয়ে উঠছে। তার উপরে কয়েক দিন ধরে রাজ্যে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এই অবস্থায় অর্থনীতির চাকা গড়ানোর লক্ষ্যে করোনা-সমস্যাহীন অঞ্চলে লকডাউন নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে গতিবিধি স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই। পদ্ধতি বদলে এই দফায় শুধু কন্টেনমেন্ট এলাকাতেই লকডাউন চলার কথা।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, সাধারণ ভাবে কোনও একটি রাস্তা ধরেই কন্টেনমেন্ট এলাকা চিহ্নিত করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার মূল দু’টি প্রবেশপথ সিল করে দেয় প্রশাসন। কিন্তু আশপাশের এলাকা থেকে গলিপথে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌঁছনোর সুযোগ থাকলে ওই পুরো চৌহদ্দি ‘বাফার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। তার বাইরের অংশ ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত এলাকা। সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাফার জ়োন বা ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত এলাকাতেও গতিবিধি সচল হবে।
আরও পড়ুন: কড়া লকডাউনেও কেন বাড়ছে করোনা-সংক্রমণ? প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে কেন্দ্র
আবার ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত এলাকাগুলিকেও সচল করবে প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, লকডাউন বলবৎ থাকা কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতে যাতে তার কোনও প্রভাব না-পড়ে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। আজ, সোমবারের বৈঠকে সেই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে কেউ কেউ অনুমান করছেন।
রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে হাওড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও কালিম্পঙের বাফার জ়োনের তালিকা দেওয়া হয়নি। সেখানে রয়েছে শুধু কন্টেনমেন্ট এলাকার তালিকা। অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে কন্টেনমেন্ট এবং বাফার জ়োন— দু’টিরই তালিকা রয়েছে। বেশির ভাগ জেলাতেই দু’টির সংখ্যা প্রায় সমান। রবিবারের হিসেব, কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা ৩৫১, বাফার জ়োনেরও তা-ই।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত আরও ৮০০০, সতর্ক করলেন মোদীও
কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতে লকডাউন চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। কেন্দ্রের আগে প্রকাশিত রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা বলছে, এই প্রক্রিয়া চলবে ১৫ জুন পর্যন্ত। রাজ্য প্রশাসনের ব্যাখ্যা, শনিবার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরে নবান্নের নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছিল। কেন্দ্র তাদের নির্দেশিকা প্রকাশ করে তার পরে। সেই জন্যই দু’টি তারিখ আলাদা হয়ে গিয়েছে। সেই বিষয়েও সোমবারের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলের ধারণা।