রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জ়োনের এ শ্রেণিভুক্ত এলাকায় কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। কঠোর ভাবে বলবৎ হবে লকডাউন। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ালেও রাজ্যে লকডাউন আপাতত বহাল থাকবে আরও দু’সপ্তাহ।
শনিবার মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য লকডাউন জরুরি। রাজ্যে তা ১৫ জুন পর্যন্ত বজায় থাকবে। তবে রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জ়োনের এ শ্রেণিভুক্ত এলাকায় কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। কঠোর ভাবে বলবৎ হবে লকডাউন। কন্টেনমেন্ট জ়োনের সি শ্রেণিভুক্ত এলাকায় সব কিছু ছাড় দেওয়া হবে। ১ জুন থেকে বাফার এলাকা বলে চিহ্নিত কন্টেনমেন্ট-বি শ্রেণিভুক্ত এলাকাতেও সব কিছু ছাড় দেওয়া হবে। এত দিন ওই এলাকায় কিছু বিধিনিষেধ ছিল। ১ জুন থেকে তা উঠে যাচ্ছে।
কেন্দ্র পুরো জুন লকডাউন বজায় রাখলেও রাজ্য কেন ১৫ জুন পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন রাখার কথা বলছে? নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা জানান, রাজ্যের লকডাউন নীতি শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর মুখ্যসচিব রাজ্যের নির্দেশিকা প্রকাশ করেন। এর পর রাত ৭টা নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়। তাতে কন্টেনমেন্ট জ়োনে লকডাউন যেমন ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, তেমনই ৮ জুন থেকে ধর্মস্থান খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে তার ছাড়পত্র ১ জুন থেকে। কেন এই পার্থক্য? মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমাদের নির্দেশিকা আগেই বার করা হয়েছিল। সোমবার এ নিয়ে আরও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’
আরও পড়ুন: হিংসা প্রসঙ্গে আক্রমণ শাহের, পাল্টা সৌগতের
আরও পড়ুন: সোমবার থেকেই শুটিং শুরুর ছাড়পত্র দিল রাজ্য
লকডাউন ১৫ জুন পর্যন্ত • কাল ফের সিদ্ধান্ত
কন্টেনমেন্ট-এ জ়োনের বাইরে ছাড়
• ৮ জুন থেকে খুলতে পারে হোটেল, রেস্তরাঁ।
• ৮ জুন থেকে খুলবে শপিং মল।
• ১ জুন থেকে চা বাগান, চটকল, নির্মাণ কাজে ১০০% কর্মীতে কাজ
• ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পে এবং খনিতেও ১ জুন থেকে ১০০% কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা যাবে
• ১ জুন থেকে রাজ্যের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু। যত আসন, তত জন যাত্রী নিয়ে যেতে হবে। দাঁড়াতে পারবেন না যাত্রীরা। তাঁদের মাস্ক ও দস্তানা পরতে হবে
• স্থানীয় পুলিশের পরামর্শ মেনে সব উপাসনাস্থল ১ জুন থেকে খোলা যাবে। তবে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ঢুকতে পারবেন না। বড় উৎসব করা যাবে না।
• ১ জুন থেকে টিভি, সিনেমা প্রযোজনার ইন্ডোর ও আউটডোর কাজকর্ম শুরু করা যাবে। ওয়েব পোর্টাল, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ ৩৫ জন নিয়ে কাজ করা যাবে
• ৮ জুন থেকে ৭০% কর্মী নিয়ে সরকারি অফিস খুলবে
• ৮ জুন থেকে বেসরকারি অফিস খোলার অনুমোদন। কর্মী সংখ্যা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। বাড়ি থেকে কাজের ব্যাপারেই রাজ্য বেশি উৎসাহ দেবে।
প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দূরত্ব বিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য সোমবার লকডাউনের সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশ পরিবর্তন করতে পারে। তবে রাজ্য সরকার কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরের এলাকা খুলে দেওয়ার যে নীতি নিয়েছিল, এ বার কেন্দ্রীয় সরকারও সেই পথ নিয়েছে। এত দিন কেন্দ্র রেড, অরেঞ্জ, গ্রিন জ়োনে ভাগ করে লকডাউন নীতি ঘোষণা করেছিল। এ বারই প্রথম রাজ্যের ঘোষিত নীতি মেনে শুধুমাত্র কন্টেনমেন্ট জ়োনে লকডাউন বজায় রাখার নীতি নিয়েছে দিল্লিও।