শুক্রবার দেশীয় উড়ানে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৮০০ যাত্রী কলকাতায় নেমেছেন। ছবি: পিটিআই।
দু’মাস ধরে এক অসহ জীবন কাটিয়ে নিজের শহরে ফিরে বিমানবন্দরের বাইরে ভাইকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সুদেষ্ণা।
শুক্রবার দুপুরে সুদেষ্ণা চৌধুরী ফিরলেন ইয়াঙ্গন থেকে। বন্দে ভারত প্রকল্পে এটা ছিল কলকাতার জন্য তৃতীয় উড়ান। এর আগে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিয়ে শুধু বাংলাদেশ থেকে দু’টি উড়ান নেমেছে কলকাতায়। এখনও ইউরোপ ও আমেরিকায় আটকে পড়া এ রাজ্যের বাসিন্দাদের ফেরার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। কবে হবে, কেউ জানেও না। বিদেশে বসে তাঁরা একের পর এক টুইট করে গেলেও সাড়া পাওয়া যায়নি কেন্দ্রের তরফে। অথচ সেই দুই মহাদেশ থেকে আটকে পড়া ভারতের অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের অনেকেই এই প্রকল্পের উড়ানে ফিরে এসেছেন নিজ নিজ রাজ্যে।
এ দিন বিদেশে আটকে পড়া এই রাজ্যের বাসিন্দাদের নিয়ে দু’টি উড়ান নামে কলকাতায়। দুপুরে ইয়াঙ্গন থেকে। সন্ধ্যায় কলম্বো থেকে। ইয়াঙ্গন থেকে ফিরেছেন ১৪ জন। বিমানে ছিলেন আরও ৫৮ জন। তাঁরা বিমান থেকে নামেননি। এই ১৪ জনকে নামিয়ে তাঁদের নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি উড়ে গিয়েছে মুম্বই। আর সন্ধ্যায় কলম্বো থেকে ভুবনেশ্বর ঘুরে যে বিমান এসেছে, তাতে ৩২ জন যাত্রী নেমেছেন কলকাতায়।
আরও পড়ুন: ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে নতুন রাস্তাটা, ঠেকাতে মরিয়া ড্রাগন
আরও পড়ুন: আর্থিক বৃদ্ধি গত ১১ বছরে সর্বনিম্ন
সুদেষ্ণার বাবার জন্ম মায়ানমারে। শেষ বয়সে জন্মভিটেতে যাওয়ার অপূর্ণ ইচ্ছে নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ৮২ বছর বয়সে মারা যান সুদেষ্ণার বাবা। তাঁর অপূর্ণ ইচ্ছার কথা ভেবেই সুদেষ্ণা গত ২০ মার্চ কলকাতা থেকে ইয়াঙ্গন গিয়েছিলেন দু’দিনের জন্য। সেখানে বৃদ্ধাশ্রমে বাবার নাম করে কিছু টাকা দিয়ে ২৩ মার্চ ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ২২ মার্চের পরে বন্ধ হয়ে যায় যাবতীয় আন্তর্জাতিক উড়ান।
কল্যাণীর বাসিন্দা, ভূতাত্ত্বিক কৌস্তুভ ঘোষও গত এক মাস ধরে দিন গুনছিলেন পরিবারের কাছে ফেরার জন্য। তাঁর দাবি, ইয়াঙ্গনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম। সেখানকার মানুষ সংক্রমণের বিষয়ে সচেতন।
এ দিন দেশীয় উড়ানে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৮০০ যাত্রী কলকাতায় নেমেছেন। কারও দেহে করোনা উপসর্গের আভাস পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে আসা যে যুবকের উপসর্গ দেখে সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছিল, তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।