মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চিকিৎসক সংগঠনের পাঠানো ইমেল (ইনসেটে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইমেল পাঠাল চিকিৎসক সংগঠন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের অনুরোধ, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিগুলিকে যাতে প্রশাসনিক স্তরে যথাযথ গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখা হয়। শুক্রবার সকালে চিকিৎসক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক পুণ্যব্রত গুণ এবং হীরালাল কোনার এই ইমেল পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। অচলাবস্থা কাটাতে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সরকারকে আলোচনায় বসারও অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে শুরু হয়েছিল অনশন। সেই থেকে ছ’দিন পার করে গিয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবারই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। আপাতত সেখানেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। অনিকেত অসুস্থ হওয়ার পরেও বাকি অনশনকারীরা অবিচল রয়েছেন নিজেদের দাবিতে। তাঁরা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন অনশন। এই অবস্থায় তাঁদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। তাই পরিস্থিতি আরও জটিলতার দিকে যাওয়ার আগেই সরকারকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন।
নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে শুরু থেকেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। মিছিলে হেঁটেছেন। সমাবেশে কণ্ঠ ছেড়েছেন। সব রকম ভাবেই আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতে সাহায্য করেছেন তাঁরা। সিনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-ও আন্দোলনের পাশে থেকেছে শুরু থেকে। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্য কোনও পন্থা খুঁজে বার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন পুণ্যব্রত গুণ। আন্দোলন থেকে যাতে সাধারণ মানুষ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান, সেই বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য শুরু থেকেই তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করেছিলেন।
জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য এর আগেও একাধিক বার সরকাররকে ইমেল করেছিল চিকিৎসক সংগঠন। অনিকেত অসুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সকালে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে ইমেল পাঠাল তারা। প্রসঙ্গত, জুনিয়র ডাক্তারেরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করার পর বুধবার সরকার পক্ষ আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার নতুন কিছু বলছে না। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়ে অনশন তুলে নেওয়ার কথা বলছে। যদিও অনশন যে এ ভাবে উঠবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।