এই ছবি রোখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।—ফাইল চিত্র।
সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে শাসক দল তৃণমূল। এনপিআর বা ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টারের কাজ স্থগিত রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তা বলে বন্ধ যে সমর্থন করা হবে না, তৃণমূল ও রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে। আজ, বুধবার বাম-কংগ্রেসের ডাকা ২৪ ঘণ্টার ভারত বন্ধের প্রভাব যাতে পশ্চিমবঙ্গে না-পড়ে, তার জন্য কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে পদক্ষেপ করছে সরকার।
বন্ধের মোকাবিলায় আজ ২২% বাড়তি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। রাজ্য পরিবহণ নিগম রোজ ৯০০টি বাস নামায়, আজ চালাবে ১১৫০টি। দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগম ৬৯২টির জায়গায় চালাবে ৮২৬টি বাস। উত্তরবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগম আজ ৬৫৫টি বাস চালাবে, যা প্রতিদিন চলা বাসের সংখ্যার তুলনায় ৫০টি বেশি।
পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই সব গাড়ির বিমা করানো হয়েছে। বন্ধের দিন কোনও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই বিমার অধীনে ছ’লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। দফতরের দাবি, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পরিবহণ সংগঠনগুলি। ট্যাক্সি, অটো সংগঠনগুলি ও অ্যাপ ক্যাব কর্তৃপক্ষ গোটা রাজ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হবে বলে জানিয়েছেন। বন্ধের দিন ভোর ৬টা থেকে পরিবহণ দফতরের কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্র-রাজ্যের হুঁশিয়ারির মুখেই আজ ডাক ধর্মঘটের
আজ সব কর্মীর হাজিরা নিশ্চিত করতে সোমবারেই নির্দেশিকা দিয়েছে অর্থ দফতর। জানানো হয়েছে, বন্ধের দিন কারও ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। নির্দেশিকা অমান্য করে যাঁরা বন্ধের দিন অফিস করবেন না, তাঁদের কর্মজীবন থেকে এক দিন বাদ যাবে। সেই দিনটির বেতনও কেটে নেওয়া হবে। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে অথবা আগে থেকে যাঁরা নির্দিষ্ট কারণে ছুটি নিয়ে রেখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্য এমন পদক্ষেপ করা হবে না। রাজ্যে বিভিন্ন বন্ধ-ধর্মঘটের আগের রাতে সরকারি দফতরে কর্মীদের রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করার নজির আছে। মঙ্গলবার অবশ্য কর্মচারী সংগঠনগুলি তেমন কোনও বন্দোবস্ত করেনি। কংগ্রেস প্রভাবিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্টস এমপ্লয়িজ় জানিয়েছে, বন্ধে তাদের নীতিগত সমর্থন থাকলেও কাউকেই অফিসে যেতে বা না-যেতে বাধ্য করানো হবে না। বন্ধকে পুরোপুরি সমর্থন করেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি। তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, কর্মীরা প্রতিদিনের মতোই অফিস করবেন। কাউকে অফিসে রেখে দেওয়ার মতো কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।’’
আরও পড়ুন: ছাত্র-মিছিলে বিশিষ্টজন, কিছু নেতাও
লালবাজার জানিয়েছে, বুধবার কলকাতার রাস্তায় চার হাজার পুলিশ থাকবে। বাস, ট্রাম ডিপো, দমকল কেন্দ্র, মেট্রো স্টেশন-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে ৩০০টি পুলিশ পিকেট করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের সব এলাকায় ডিসি-দের রাস্তায় থাকতে বলা হয়েছে। নজরদারিতে থাকবেন যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরাও। শহরে ঘুরবে ২৭টি পুলিশ কন্ট্রোল রুম ভ্যান। থাকবে ২২টি হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড (এইচআরএফএস) এবং ৩১টি রাউন্ড দ্য ক্লক পেট্রল (আরসিপি)। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ যাবতীয় ব্যবস্থা করছে।’’