রাজ্যকে নিশানা করলেন অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। সংসদে বিষয়টি তুলে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন শাসকদলের সাংসদরা। এই বিষয়টির বিরোধিতা না করলেও রাজ্যের বিরুদ্ধেও পুরসভাকে এড়িয়ে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ তুললেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার তিনি এই অভিযোগ তুলেছেন।
মেয়রের দাবি, রাজ্য সরকারের কয়েকটি দফতর এবং এজেন্সি পুরসভাকে এড়িয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করছে। এই কারণে রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ করা নিয়ে অভিযোগ তোলার নৈতিক অধিকার রাজ্যের মন্ত্রী, শাসক দলের সাংসদদের রয়েছে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারের অধিকারে হস্তক্ষেপ করবে, আমরা তার বিরুদ্ধে। রাজ্যপালই বা কেন হস্তক্ষেপ করবে রাজ্য সরকারের উপর। রাজ্যপাল সংবিধান মেনে কাজ করবেন। ঠিক তেমনি রাজ্যকেও সংবিধান মেনে চলতে হবে। রাজ্যও পুরসভা, পঞ্চায়েতকে এড়িয়ে চলতে পারে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সমান্তরাল প্রশাসন চালানো যেমন কেন্দ্রের উচিৎ না, রাজ্যপালের উচিৎ না, তেমনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিৎ নয়।’’ কিন্তু রাজ্য সরকার সেটাই করছে বলে অশোকের অভিযোগ।
এ দিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধেও আক্রমণ করেন মেয়র। অশোক বলেন, ‘‘এখানে যিনি মন্ত্রী আছেন তিনি বিষয়টিকে উৎসাহ দিচ্ছেন। এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে তাঁরও সংযত হওয়া উচিৎ। তিনি শিক্ষিত মানুষ, একজন আইনজীবী, কার কী কাজ জানেন।’’ মেয়রের অভিযোগ, পুরসভার কাজে তাদের হস্তক্ষেপের অধিকার আছে বলে হুমকি দিয়ে থাকেন মন্ত্রী। যা শুনে পর্যটনমন্ত্রীর জবাব, ‘‘আমার তাঁকে কিছু বলা উচিৎ নয়। তিনি প্রবীণ রাজনীতিক। তাঁকে সম্মান জানাই। পুরসভায় তাঁদের মেয়াদ শেষ হয়ে এসেছে। এই সমস্ত বিতর্কের মধ্যে না ঢুকে তাঁর তো উচিৎ কাজে মনযোগ দেওয়া। মানুষ নাগরিক পরিষেবা পাচ্ছেন না। তিনি সেই কাজ ভাল করে করলে মানুষ উপকৃত হবেন।’’ গৌতমের দাবি, যেটা গুরুত্ব দেওয়ার বিষয় নয় সেটাতে গুরুত্ব দিচ্ছেন মেয়র। আর মূলবিষয় থেকে সরে যাচ্ছেন।
শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ও শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কোনওসময় পুরসভাকে সেই বিষয়ে জানান পর্যন্ত হয়নি বলে অভিযোগ। এইখানেই আপত্তি রয়েছে বর্তমান পুরবোর্ডের। তাদের দাবি, কোনও দফতর কাজ করতেই পারেন। কিন্তু পুরসভার সঙ্গে কথা বলে, সম্মতি নিয়েই তা করা উচিৎ। এই বিষয়ে এসজেডিএর চেয়ারম্যান বিজয়চন্দ্র বর্মণ জানিয়েছিলেন, সরকারি কাজ তারা এ ভাবে করতে পারেন। মেয়রের পাল্টা দাবি, ‘‘তিনি আইন জানেন কি? পার্সপেক্টিভ প্ল্যানে বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে। সেই মতো কাজ করতে হয়।’’