পশ্চিমবঙ্গের পুকুরে পরীক্ষামূলক ভাবে সামুদ্রিক মাছের চাষ শুরু হয়েছে বছর চারেক আগে। পমফ্রেটের বিকল্প ‘সিলভার পমপ্যানো’র চাষের সেই বঙ্গীয় পদ্ধতিকে সারা দেশেই ‘মডেল’ বা আদর্শ করতে চলেছে কেন্দ্র।
রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে তামিলনাড়ুর মান্দাপম থেকে প্রায় ১০ হাজার সিলভার পমপ্যানোর চারা এনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আলমপুরে নিগমের পুকুরে ফেলা হয়েছিল। ২০১৫ সালে এক-একটির ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম হওয়ার পরে ১০ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করেছিল নিগম। পরে আরও ৪০ হাজার সিলভার পমপ্যানোর চারা এনে আলমপুরের পুকুরে ছাড়া হয়। কয়েক মাস আলমপুর ঘুরে যান ন্যাশনাল ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (এনএফডিবি) বা জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন পর্ষদের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার রানি কুমুদিনী। পুকুরে সামুদ্রিক মাছ চাষের পদ্ধতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন পর্ষদের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর বিমলকিঙ্কর চাঁদ বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদ থেকে ফোনে বলেন, ‘‘কৃত্রিম ভাবে সামুদ্রিক মাছ চাষে উৎসাহ বাড়াতে আমরা শীঘ্রই টেন্ডার ডাকব। সামুদ্রিক মাছ চাষের জন্য মাছের চারা ও খাবারের অধিকাংশ অর্থ জোগাবে কেন্দ্র।’’ এনএফডিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, উপকূলবর্তী বিভিন্ন রাজ্য তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ওড়িশা, পুদুচেরি ও অন্ধ্রের চাষিদের কৃত্রিম উপায়ে সামুদ্রিক মাছ চাষে উৎসাহ দেওয়া হবে।
মাত্র চার বছরেই পশ্চিমবঙ্গে সিলভার পমপ্যানো মাছ চাষে সাফল্য কী ভাবে এল? মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্রের লাগোয়া এলাকায় পুকুর কেটে অত্যাধুনিক মানের বায়ুসঞ্চালক যন্ত্র বসানো হয়েছে। পুকুরে ২৪
ঘণ্টা নজরদারি চলছে। ‘‘পরীক্ষামূলক চাষের প্রকল্প সফল হওয়ায় এ
বার আমরা সিলভার পমপ্যানোর প্রজনন ব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হবো,’’ বলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।
সিলভার পমপ্যানো
• পমফ্রেট ও সিলভার পমপ্যানোর গোত্র এক, প্রজাতি আলাদা। পমফ্রেটের তুলনায় সিলভার পমপ্যানো একটু লম্বাটে। চামড়াও একটু মোটা। তাজা পমফ্রেটের রং নীলাভ। সিলভার পমপ্যানো রুপোলি, চকচকে। স্বাদেও অনেকটা পমফ্রেটের মতো।
বিদেশে চাহিদা
• সিঙ্গাপুর, চিন, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স।
দাম
• ২৫০-৩০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম।