ভ্রামমাণ সেই ল্যাবরেটরি। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে খাবারের নমুনা সংগ্রহের জন্য লোকবল থাকলেও তা পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারের অভাব। ভেজাল খাবার নির্ণয়ে বর্তমানে নমুনা পরীক্ষার জন্য আছে তিনটি স্থায়ী পরীক্ষাগার। কলকাতা পুর এলাকার জন্য পুরসভার নিজস্ব পরীক্ষাগার ছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খাদ্যের নমুনা পরীক্ষা করা হয় এন্টালির পরীক্ষাগারে। এ ছাড়াও শিলিগুড়িতে রয়েছে একটি পরীক্ষাগার। দিনে দিনে খাবারের মান নিয়ে নানা সংশয় প্রকট হয়ে উঠেছে। নমুনা পরীক্ষায় নানা ক্ষতিকারক উপাদান বেশি করে ধরা পড়ছে। এই কথা মাথায় রেখে চলতি বছরে সমস্ত জেলায় ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার চালু করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে এখন মাত্র ১৪টি ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালদহ, নদিয়া, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা ও দার্জিলিংয়ে দুটি করে খাদ্যের নমুনা পরীক্ষার জন্য ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার রয়েছে। ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিটি ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ১৪টি জেলায় এখনও একটিও ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার নেই। চলতি বছরেই তা চালু হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘খাদ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। দু’বছরের মধ্যে মালদহ, বর্ধমান ও মেদিনীপুরে স্থায়ী খাদ্য-পরীক্ষাগারও চালু করতে চায় রাজ্য। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্থায়ী পরীক্ষাগার করতে জমি খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
কলকাতা পুর এলাকার জন্য খাদ্যের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে নিউ মার্কেটে। আবার এন্টালির খাদ্য পরীক্ষাগারে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ফুড সেফটি অফিসারেরা খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠান। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি ঠিকঠাক হলেও বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষাগার না থাকায় সুদূর
কলকাতায় এসে পরীক্ষা করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’
সারা রাজ্যে ফুড সেফটি অফিসারের ১৯০টি পদের মধ্যে ১৮২টি পদ পূরণ হয়েছে। কলকাতা পুরসভা এলাকায় ২২ জন ফুড সেফটি অফিসার রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ২০১৮ সালে ৪৪ ও ২০২২ সালে ২২টি স্থায়ী ফুড সেফটি অফিসারের পদে নিয়োগ হয়েছে। বর্তমানে পর্যাপ্ত লোকবল থাকলেও খাদ্যের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সেই কথা মাথায় রেখেই
আমরা প্রতি জেলায় ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগারের পাশাপাশি স্থায়ী পরীক্ষাগার নির্মাণ করব।’’