ফাইল চিত্র।
ফ্লো-মিটারের অভাবে বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর ঘটনার পরেই অক্সিজেন ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিটি হাসপাতালে কিছু নার্সকে শুধু অক্সিজেন প্রয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নন-মেডিক্যাল ক্যাটেগরির এক জন সহকারী সুপার করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা এবং অক্সিজেন প্রয়োগের তত্ত্বাবধানের নির্দিষ্ট দায়িত্ব পাচ্ছেন।
রাজ্যের সব হাসপাতালের সুপারদের উদ্দেশে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, অক্সিজেন ব্যবহারে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত অক্সিজেন ব্যবহারের প্রবণতা থেকেই কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ। বলা হয়েছে, অক্সিজেন দিয়ে রোগীকে স্থিতিশীল করার পরে যদি দেখা যায় যে, তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২-৯৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে, তখন শরীরের অক্সিজেন মাত্রা বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে অক্সিজেন চালানোর প্রয়োজন নেই।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, চিকিৎসককে অবশ্যই অক্সিজেন ফ্লো-রেট এবং কোন যন্ত্রের মাধ্যমে তা দেওয়া হচ্ছে, সেটা প্রেসক্রিপশনে উল্লেখ করতে হবে। রোগীর শরীরের অক্সিজেন মাত্রা পরীক্ষা করে তা দেওয়ার মাত্রা বাড়ানো বা কমানোর বিষয়টি ঠিক করতে হবে কর্তব্যরত নার্সকে। রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২-৯৬ শতাংশের মধ্যে থাকছে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে তাঁকেই। এবং এই সব তথ্য রিয়েল টাইমে কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিপিএমএস)-এ আপলোড করতে হবে, যাতে স্বাস্থ্য ভবনও নজরদারি চালাতে পারে।
ঠিক হয়েছে, হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, যথাযথ ভাবে তা ব্যবহার হচ্ছে কি না, কতটা মজুত রয়েছে— এ-সব দেখার দায়িত্বে থাকবেন এক জন সহকারী সুপার। একজন ডেপুটি নার্সিং সুপার বা ওয়ার্ড সিস্টারকে 'নার্সিং অফিসার ইনচার্জ ফর অক্সিজেন ম্যানেজমেন্ট' হিসেবে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। অন্যান্য নার্স অক্সিজেনের জোগান বাড়ানো থেকে শুরু করে অক্সিজেন ব্যবস্থাপনার নিয়মবিধি ঠিকমতো মানছেন কি না, তা দেখতে হবে ওই নার্সিং অফিসার ইনচার্জকে। সেই সঙ্গে সিপিএমএস-এ ঠিকমতো তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব পাবেন এক জন নার্স। আর পুরো বিষয়টির মূল্যায়নের দায়িত্বে থাকবেন হাসপাতালের সুপার।