প্রতীকী ছবি।
শয্যা বাড়াতে হবে। সোমবার নন্দন ৩’এ বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিল স্বাস্থ্য কমিশন। আর দুই হাসপাতাল পেল হুঁশিয়ারি। শয্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগী প্রত্যাখ্যান যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে বলেছে কমিশন। উপস্থিত বেসরকারি হাসপাতালের এক প্রতিনিধির কথায়, ‘‘শয্যার অভাবে রোগী ভর্তি করতে না পারলে সরকারি স্তরে জানাতে বলা হয়েছে। তবে রোগী ফেরানো যাবে না।’’
শয্যা-সঙ্কটের মোকাবিলায় বেসরকারি ‘স্যাটেলাইট সেন্টার’গুলিকে আগামিদিনে অস্থায়ী লাইসেন্স দেওয়া নিয়েও রাজ্য ভাবছে বলে কমিশন জানিয়েছে। এক বেসরকারি হাসপাতালের কর্তা বলেন, ‘‘এর অর্থ স্যাটেলাইট সেন্টারেও নার্স, অক্সিজেনের সরবরাহ-সহ চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।’’ বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলি মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, ৫০০-র মতো শয্যা আগামী দিনে তারা বাড়াতে পারবে।
রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালে শয্যার জোগানেও টান পড়তে শুরু করেছে। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ৪০,০৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫৮৩ জনের দেহে করোনা মিলেছে। কেস পজ়িটিভিটির হার ৮.৯৪%! জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দশ দিন আগেও প্রায় ৪৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে তিন হাজারের কিছু বেশি কেস পাওয়া যেত। সেখানে চার হাজার নমুনা কম পরীক্ষা করার পরও প্রায় তিন হাজার ছশো’র কাছাকাছি আক্রান্তের হদিশ মেলার ঘটনা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে পুজোর মধ্যেই সংক্রমণের সংখ্যা উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছবে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
নন্দনের বৈঠকে কার্যত সেই উদ্বেগেরই প্রতিফলন ঘটেছে। এ দিন আক্রান্তের পরিসংখ্যানে কলকাতাকে (৭১৭) টপকে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (৭৫৯)। ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৬০ জন করোনা-আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে ৩৫ জন ওই দুই জেলার বাসিন্দা! এ দিকে উত্তর কলকাতা এবং উত্তর শহরতলি এলাকায় বেসরকারি বড় হাসপাতালের সংখ্যা কম। সেই সূত্রে এ দিন শহরের দু’টি বেসরকারি হাসপাতালকে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
বৈঠকে বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের একাংশ জানান, ওই দুই হাসপাতাল তাদের মোট শয্যা সংখ্যার দশ শতাংশও কোভিডে বরাদ্দ করেনি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল, বুধবারের মধ্যে সব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে ওই দুই হাসপাতালকেও ‘উল্লেখযোগ্য ভাবে’ শয্যা বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধি জানান, ক্যানসারের রোগীদের কথা ভেবে চেয়েও বেড বাড়ানো যাচ্ছে না। আর একটি হাসপাতাল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের রোগীদের অসুবিধার কথা বলে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।