—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
স্থলপথে গঙ্গাসাগরকে জুড়তে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে সেতু তৈরির তোড়জোড় শুরু করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষের প্রশ্নের জবাবে জানান, ১৪৩৮ কোটি ৬২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকায় মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে সেতু তৈরি হচ্ছে। গত বুধবার সেতু তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শুক্রবার বিধানসভায় মন্ত্রী অভিযোগ করেন, কুম্ভমেলার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করলেও গঙ্গাসাগর যাওয়ার সেতু নির্মাণের জন্য টাকা দেয়নি কেন্দ্র। তিনি জানান, ‘জাতীয় মেলা’ বলেও ঘোষণা করা হয়নি গঙ্গাসাগর মেলাকে। এই পরিস্থিতিতে সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ রাজ্যের পূর্ত দফতরই জোগাবে বলে জানান বঙ্কিম।
মুড়িগঙ্গায় ৩.১ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সেতু নির্মাণের জন্য গত বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানায় রাজ্য। এর মধ্যে প্রথম বছরের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবার্ডের সহযোগিতায় রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (আরআইডিএফ) টাকায় এই সেতু গড়া হবে। সাগরদ্বীপে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের বাস। সাগরমেলা ছাড়াও বছরভর এখানে পুণ্যার্থীরা আসেন। কিন্তু যাতায়াতের বড় সমস্যা মুড়িগঙ্গা নদী। সাগরদ্বীপ থেকে ধান পান-সহ মরসুমের আনাজ আসে কাকদ্বীপ বাজারে। রুজি-রুটির টানে কাকদ্বীপে আসেন এলাকার মানুষ। যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহণের জন্য ভেসেল এবং বার্জই একমাত্র ভরসা। রোগীদেরকেও নদী পেরিয়ে আনতে হয় শহরে।
স্থানীয়দের দাবি, গত কুড়ি বছর ধরে এই সমস্যায় নাজেহাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে তীর্থযাত্রীদের। এ বার সেতু তৈরি হয়ে গেলে সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে বলে তাঁরা মনে করছেন। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, এই সেতু হলে গঙ্গাসাগরে যাওয়া আরও সহজ হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং এলাকার পর্যটনে জোয়ার আনতেও এই সেতু বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।